সংঘাতের সময় নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। এবার তিনি প্রকাশ্যে এসেই একটি ভিডিও বিবৃতিতে আমেরিকা ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘বিজয়ের’ দাবি করেছেন। ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর এটাই তার প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্য।
১২ দিনের সংঘর্ষ শেষে বৃহস্পতিবার দেওয়া বক্তব্যে খামেনি বলেন, ‘আমরা আমেরিকার মুখে একটি কঠিন চড় মেরেছি। সন্ত্রাসী জায়নবাদী ইসরায়েল প্রায় ধ্বংসের মুখে পৌঁছে গিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমি ইরানের মহান জাতিকে তিনটি শুভেচ্ছা জানাতে চাই। প্রথমত, মিথ্যা জায়নবাদী শাসনের ওপর বিজয়ের জন্য। দ্বিতীয়ত, মার্কিন শাসনের বিরুদ্ধে বিজয়ের জন্য। আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়, কারণ তারা বুঝেছিল, না হলে ইসরায়েল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তবুও তারা কিছু অর্জন করতে পারেনি। এখানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র জয়ী হয়েছে।’
ইরানি জনগণের ঐক্যের ভূয়সী প্রশংসাও করেন খামেনি। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৯ কোটি মানুষের এই জাতি এক কণ্ঠে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে।’
এই সংঘর্ষে আমেরিকা ইরানের ফরদো ও নাটাঞ্জসহ তিনটি প্রধান পরমাণু কেন্দ্রে বিমান হামলা চালায়। পাল্টা জবাবে ইরান কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
এদিকে পেন্টাগনের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী—যুক্তরাষ্ট্র বোমা ফেলার আগেই ইরানের ইউরেনিয়াম মজুত আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। ফলে কেন্দ্রগুলোর খুব বেশি ক্ষতি হয়নি।
ইসরায়েলের হামলার সময় ইরান-আমেরিকার মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছিল বলেও খামেনি উল্লেখ করেন। বলেন, ‘আমরা তখন সামরিকভাবে কোনো তৎপরতা দেখাইনি। কিন্তু শুরু থেকেই অনুমান করা যাচ্ছিল, এই ষড়যন্ত্রের পেছনে আমেরিকা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে এবং দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতেও কঠোর শাস্তির পরিকল্পনা রয়েছে। আমেরিকার হস্তক্ষেপই প্রমাণ করে জায়নবাদী শাসন দুর্বল।’
বক্তব্যের শেষে খামেনি বলেন, ‘ইরানি জাতিকে পরাজিত করা যাবে না এবং তারা কখনো কারও আগ্রাসনের সামনে আত্মসমর্পণ করবে না।’
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে। যদিও উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। ইরান-ইসরায়েল সম্পর্কের ইতিহাসে এ সংঘর্ষ এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।
ইএইচ