ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ারের চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ সব বকেয়া বাংলাদেশ সরকার পরিশোধ করেছে।
গত জুন মাসে বাংলাদেশ এককালীন ৪৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করে, যা প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে পাওয়া এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ একক পরিশোধ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস জানায়, আদানি পাওয়ার প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে সাধারণত ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার আয় করতো।
তবে সর্বশেষ এককালীন এই বিশাল পরিশোধের মাধ্যমে বকেয়া বিল, সুদ ও অন্যান্য খরচসহ সব পাওনা পরিশোধ হয়ে গেছে। এর ফলে আদানি-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ চুক্তি পুনরায় আর্থিক ও আইনি স্থিতিশীলতায় এসেছে।
ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আদানি পাওয়ার উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করছে। পাওনা পরিশোধের পর বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আদানিকে নির্দেশ দিয়েছে ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুই ইউনিটই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চাহিদা অনুযায়ী সচল রাখতে।
সমঝোতা অনুযায়ী, গত অর্থবছরের বকেয়া ৩০ জুনের মধ্যে পরিশোধ করলে বিলম্ব মাশুল মওকুফ করা হবে। বাংলাদেশ সময়সীমার মধ্যে অর্থ পরিশোধ করায় অতিরিক্ত শুল্ক থেকে রেহাই পেয়েছে।
ভবিষ্যতে সময়মতো বিল পরিশোধ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ দুই মাসের সমপরিমাণ অর্থ (প্রায় ১৮০ মিলিয়ন ডলার) অগ্রিম এলসি খুলেছে এবং বাকি পাওনার জন্য রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টিও দিয়েছে।
এর আগে মে মাসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, আদানির কাছে বাংলাদেশের বকেয়া প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল।
আদানি পাওয়ারের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা দিলীপ ঝা জানিয়েছেন, মোট বিল ছিল প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ১.২ বিলিয়ন ডলার আদায় হয়েছে এবং বিলম্বজনিত কারণে অতিরিক্ত ১৩৬ মিলিয়ন ডলার যুক্ত হয়েছে।
তবে আদানি পাওয়ারের প্রধান নির্বাহী এসবি খ্যালিয়া জানান, বকেয়া থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কখনো বন্ধ হয়নি। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে আদায়যোগ্য পাওনা প্রায় ৫০০ কোটি রুপি কমেছে।
এদিকে, বিদ্যুৎচুক্তির পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভারতের পক্ষ থেকেও কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আদানির গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র, যা আগে একটি আলাদা সহযোগী প্রতিষ্ঠানের অধীনে ছিল, তা এখন মূল কোম্পানির সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক কার্যক্রমে আরও গতি আসবে বলে প্রতিষ্ঠানটি আশা করছে।
ইএইচ