হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ ৫ অভিযোগ

আদালত প্রতিবেদক প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ০২:০৯ পিএম

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

প্রসিকিউটর জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি অভিযোগ প্রকাশ করা হয়েছে, বাকিগুলো তদন্তের স্বার্থে আপাতত প্রকাশ করা হচ্ছে না।

প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে উসকানি ও প্ররোচনা দিয়েছেন। তিনি একটি সংবাদ সম্মেলনে "রাজাকারের নাতিপুতি" বলে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে মন্তব্য করেন, যার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলো আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণে উৎসাহিত হয়।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরাসরি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মারণাস্ত্র, হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহারের নির্দেশ দেন। তদন্ত সংস্থা তার একাধিক টেলিফোন কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ও দলিল সংগ্রহ করেছে, যেখানে এই নির্দেশনার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।

এর আগে ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করতে দুই মাস সময় দেন ট্রাইব্যুনাল। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষ করতে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়।

চলমান ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নির্বিচার গুলি, হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়নের ঘটনায় শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে এই বিচারিক কার্যক্রম চলছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি অনুযায়ী, ওই সময়ে প্রায় দেড় হাজার নিরস্ত্র মানুষ প্রাণ হারান।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই-আগস্টের ঘটনার বিচার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু করে।

ইএইচ