শেরপুরে তীব্র শীতে কৃষি ও পোল্ট্রি ফার্মসহ নানা খাতে ধস

ঝিনাইগাতি (শেরপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৩, ০৪:৩২ পিএম

শেরপুরের সীমান্ত অঞ্চলে শৈত প্রবাহ ও কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কারনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র। কৃষি, বানিজ্য, পোল্ট্রি ফার্ম, ডেইরি ফার্মসহ মানব জীবনে পড়ছে শীতের বিরুপ প্রভাব। প্রচণ্ড শীতের কারনে জন জীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। কৃষি খাতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ঘন কুয়াশা ও শৈত প্রবাহের কারনে।

ক্ষতির মুখে পড়েছে চলতি বোরো মৌসুমের বোরো বীজতলার (চারা)। একই সাথে ব্যাপক ভাবে ক্ষতি হয়েছে নানা জাতের সবজী খেত। বোরো বীজ তলার বীজ (চারা) নষ্ট হওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে বোরো মৌসুম। বোরো বীজ নষ্ট হওয়ায় অনেক কৃষককে বোরো বীজ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। প্রতি ১ কেজি বোরো বীজের (চারা) ক্রয় করতে হচ্ছে ১৫শ থেকে ১৮শ টাকা। এতে অনেক দরিদ্র  ও প্রান্তিক চাষির ক্রয় করা অত্যন্ত কষ্ট সাধ্য। কিন্তু কোন উপায় না পেয়ে উচ্ছমূল্যেই কৃষকদেরকে বোরো বীজ কিনতে হচ্ছে।

উল্লেখ্য ধানের বাজার ভালো হওয়ায় এ বছর অত্র উপজেলায় লক্ষ মাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বোরো চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। বিগত বছরে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। কিন্তু এ বছর প্রায় ১৫/১৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি বোরো বীজের সংকট না হয় তাহলে লক্ষ মাত্রার চেয়ে বেশি জমিতেই বোরো চাষ আশা করা যায়। প্রকাশ থাকে যে তীব্র শীতের কারনে কৃষক ও শ্রমিকেরা বোরো ফসলের চাষাবাদে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে শ্রমিকেরা কাজ করতে গিয়ে বহু শ্রমিক ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অপর দিকে দীর্ঘস্থায়ী প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ার বিরুপ প্রভাবে জীববৈচিত্রের উপরে প্রভাবিত হওয়ায় ব্যাপকভাবে ক্ষতির মূখে পড়েছে অত্র অঞ্চলের সকল ক্ষেত্রে। অত্র উপজেলায় ছোট বড় অনেক গুলি পোল্ট্রি ফার্ম ও ডেইরি ফার্ম রয়েছে। এই সমস্ত ফার্ম থেকে প্রতিনিয়ত উৎপাদিত হতো ডিম ও দুধ। কিন্তু বহু পোল্ট্রি ফার্মে প্রচন্ড দীর্ঘ শীতে ফার্মের মুরগি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় ফার্মের মুরগি থেকে ডিমের। এতে এক দিকে যেমন লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে পড়ে পোল্ট্রি ফার্মের মালিকগণ অপর দিকে দেশের ডিম উৎপাদনে মারাত্বক ভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

পোল্ট্রি ফার্ম মালিক আলহাজ্ব মো. আব্দুস ছাত্তার ও আলহাজ্ব মো. আবু ছালে জানায় বৈরী এই আবহাওয়ায় তারা লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষাতির মুখে পড়েছে। এছাড়া মৎস্য খাতেও ব্যাপক ধস নেমেছে এতে মৎস্য চাষিরা রয়েছে বিপাকে। এমনকি অনেক ছোট ফার্ম মালিকগণও একেবারে নিস্ব হয়ে গেছেন এই বিরুপ প্রতিকূল আবহাওয়ায় কারনে। পাশাপাশি দরিদ্র প্রান্তিক চাষিরা অত্র এলাকায় নানা জাতের সবজী চাষ করে তাদের জীবন জীবিকা চালায়। কারন অল্প জমিতে ধান পাট চাষ করে তাদের সংসার চলে না। তাই তারা অল্প জমিতে বছর জুড়েই নানা জাতের সবজি চাষ করে উৎপাদিত সবজী বাজরে বিক্রি করে জীবন জীবিকা চালায়। এই দরিদ্র চাষিরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই বৈরী আবহাওয়ায়।

তাই বিজ্ঞমহল মনে করে ক্ষতিগ্রস্থ প্রান্তিক চাষি ও পোল্ট্রি ও ডেইরি ফার্ম মালিকদেরকে সুদ মুক্ত ঋণ সহায়তা প্রদান করে তাদেরকে পূনরায় উৎপাদন মুখি করা জরুরি দরকার। না হলে উৎপাদনে দেখা দিবে সংকট ক্ষতির মুখে পড়বেন উৎপাদনকারীরা।

আরএস