সুরের মূর্ছনা ও কবিতার ছন্দে ছন্দে চলছে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। আজ শুক্রবার ভোর ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে শুরু হয় বাংলা ১৪৩০ সালকে বরণ করে নেওয়ার এই ঐতিহ্যবাহী আয়োজন।
শুরুতেই পরিবেশন করা হয় আট মিনিটের আহির ভৈরব সুরের সারেঙ্গি বাদন। ছায়ানটের শিল্পীদের বাজনা মুহূর্তেই মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয় রমনাজুড়ে। রমজান মাসের কারণে এবারের আয়োজনে অন্যান্য বারের চেয়ে মানুষের উপস্থিতি কম হলেও সকাল থেকে রমনার বটমূলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসে বহু মানুষ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সমবেত কণ্ঠে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পীরা। এরপর একক গানে ফুটিয়ে তুলছেন প্রকৃতি, মানবপ্রেম, দেশপ্রেম ও আত্মবোধনের অনুভব। গানের ফাঁকে ফাঁকে আবার কবিতা আবৃত্তিও স্থান করে নিয়েছে এ বিশেষ অনুষ্ঠানে।
পহেলা বৈশাখকে ঘিরে প্রতি বছরের মতো এবারও জোর নিরাপত্তায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হচ্ছে। বর্ণিল এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করছে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার।
ছায়ানটের পাশাপাশি বর্ষবরণে থাকছে চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা। সাধারণত নববর্ষে পান্তা-ইলিশসহ নানা রকম দেশি খাবারের আয়োজন থাকে। তবে এবার পবিত্র রমজানে দিনের বেলায় এসব খাবারের আয়োজন থাকছে না। আর সব কর্মসূচিও রমজানের মর্যাদা রক্ষা করে উদ্যাপন করা হবে বলে আগেই জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
রাজধানীতে ১৯৬৭ সালে প্রথম রমনার বটমূলে পয়লা বৈশাখের সূর্যোদয়ের সময় সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছায়ানট। সেই অনুষ্ঠানই মূলত বাংলা নববর্ষ বরণের সাংস্কৃতিক উৎসবকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রেরণা যুগিয়েছে।
সেই থেকে (১৯৬৭) পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের একটা অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গও হয়ে উঠেছে ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন। এরপর কেবল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বৈরী পরিবেশের কারণে অনুষ্ঠান হতে পারেনি। ২০০১ সালে এ গানের অনুষ্ঠানে জঙ্গিরা ভয়াবহ বোমা হামলা করলেও অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়েনি। এর মধ্যে করোনার কারণে ২০২০–২১ সালে বর্ষবরণের এই আয়োজন সম্ভব হয়নি। দুই বছর পর গত বছর সাড়ম্বরে রমনার বটমূলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করে ছায়ানট।
এআরএস