নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিলের দাবি পেশাজীবি মহিলা ফোরামের

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম

নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নারীর অধিকার নয়, বরং পরিবার, সমাজ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে সরাসরি আঘাত। এমন অভিযোগ তুলে কমিশন সম্পূর্ণভাবে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেশাজীবি মহিলা ফোরাম।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বাংলাদেশ পেশাজীবী মহিলা ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘নারী কমিশনের সুপারিশমালা ও নারী সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ দাবি ওঠে। ফোরামের সদস্য নাসিমা বেগম ঝুনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, নারীর প্রকৃত উন্নয়ন ন্যায্য অধিকার ও পারিবারিক মূল্যবোধ রক্ষা করে, ধর্মীয় বিধান অমান্য করে নয়।

প্রধান আলোচক সমাজকর্মী উম্মে খালেদা জাহান বলেন, ‘রাসূল (সা.) নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তা দিয়েছেন। অথচ নারী সংস্কার কমিশন সমান অধিকারের নামে এমন প্রস্তাব দিয়েছে, যা ইসলামী বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ইসলামে দেনমোহর পুরুষের দায়িত্ব, সমান অধিকার হলে নারীকেও দিতে হবে- তাহলে নারীর সম্মান কোথায়?’

সভায় ফোরামের সদস্য কবি শামীমা রহমান শান্তা বলেন, ‘কমিশন গঠন করা হয়েছে কিছু নির্বাচিত ব্যক্তিকে দিয়ে, যা নারীদের প্রত্যাশার পরিপন্থী।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে সমাজে স্বেচ্ছাচারিতা বাড়বে এবং সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে।’

এশিয়ান টিভির সহ-বার্তা সম্পাদক জাবালুন নূর বলেন, ‘নারীদের দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস উপেক্ষা করে কমিশন দাবি করছে, নারীরা রাজনৈতিকভাবে সচেতন নয়। অথচ বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলনে নারীরা সামনে থেকেছে। এই ইতিহাস মুছে ফেলা উচিত নয়।’

পেশাজীবি মহিলা ফোরামের সদস্য তাসলিমা মুনীরা বলেন, ‘কমিশনের সুপারিশ নারীর পারিবারিক দায়িত্বকে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখাচ্ছে, যা সমাজে অস্থিরতা বাড়াবে। পুরুষের উপার্জনের ওপর দায়িত্ব থাকলেও নারীর সম্পদে তার একক অধিকার- এই ভারসাম্যই ইসলামী বিধান।’

লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. সাজেদা হুমায়রা অভিযোগ করেন, ‘এই কমিশন ধর্মীয় পারিবারিক আইন বাতিল করে পশ্চিমা সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে। কুরআন যে উত্তরাধিকার আইন দিয়েছে, তা লঙ্ঘনের অর্থ ধর্ম ও সংবিধান উভয়ের বিরোধিতা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবিকুন্নাহার তামান্না বলেন, ‘নারী সংস্কার কমিশন ‘শরীর আমার, সিদ্ধান্ত আমার’ শ্লোগানের আড়ালে নারীত্বকে অবমাননা করছে। নারীর স্বাধীনতা মানে পরিবার ও সমাজ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া নয়।’

সভাপতির বক্তব্যে নাসিমা বেগম ঝুনু বলেন, ‘কমিশনের সুপারিশমালা ইসলাম, হিন্দু, খ্রিস্টান-সব ধর্মের বিশ্বাসের প্রতি অবমাননাকর। ধর্মীয় অনুভূতি উপেক্ষা করে কোনো সংস্কার সমাজে টিকবে না। আমরা সমান অধিকার নয়, চাই ন্যায্য অধিকার-ধর্ম ও পারিবারিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে।’

আরএস