জাতীয় হিফজুল কোরআন ও সীরাত প্রতিযোগিতা এবং ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, “ইমামগণ সমাজে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। নৈতিকতা ও আদর্শিক মূল্যবোধের বিকাশে তাঁদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জনগণের সঙ্গে তাঁদের সংযোগ সরাসরি; তাই তাঁদের সংগঠিত করা গেলে সমাজ পরিবর্তনের ধারা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।”

রোববার (২৯ জুন) দুপুর ২টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় হিফজুল কোরআন ও সীরাত প্রতিযোগিতা এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা আরও জানান, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৬৩ হাজার ১৯৭ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ ও অনুদান হিসেবে মোট ৩৭ কোটি ৯২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ কোটি টাকা উদ্যোক্তাদের ঋণ এবং ২০ কোটি ৯১ লাখ টাকা অফেরতযোগ্য অনুদান প্রদান করা হয়। শুধু ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিতরণ হয়েছে ৪ কোটি ১১ লাখ টাকা।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “ইসলামের অপব্যাখ্যা রোধ করা, সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা এবং সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও সহনশীলতা প্রতিষ্ঠা করাই এখন সময়ের দাবি। আমরা চাই—একটি শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ, যেখানে মসজিদ হবে জ্ঞানের কেন্দ্র, আর ইমাম হবেন নেতৃত্বের দিশারি।”

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক হিফজ ও ক্বিরাত প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের সাফল্য গোটা জাতির জন্য গর্বের বিষয়। “এই অর্জন প্রমাণ করে আমাদের সন্তানেরা কোরআনের আলোয় আলোকিত। এখন দরকার সেই আলোকে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া, যেখানে ইমামদের প্রশিক্ষণ ও অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,”—যোগ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক।সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আ. ছালাম খান।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরস-এর সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক, ড. খলিলুর রহমান মাদানী, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাবৃন্দ, ওলামায়ে কেরাম এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীরা।

অনুষ্ঠান শেষে বাইতুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।

সম্মেলনে হিফজুল কোরআন ও সীরাত প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ের ৩টি গ্রুপে ৯ জন করে মোট ২৭ জন বিজয়ী এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের মধ্যে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয় বিতরণ করা হয়।

জাতীয় পর্যায়ে ৩ জন শ্রেষ্ঠ ইমাম

বিভাগীয় পর্যায়ে ২৪ জন

জেলা পর্যায়ে ১৯২ জন

৬৪ জন শ্রেষ্ঠ খামারী ইমাম-কে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায়:

প্রথম পুরস্কার: ২ লক্ষ টাকা

দ্বিতীয় পুরস্কার: ১.৫ লক্ষ টাকা

তৃতীয় পুরস্কার: ১ লক্ষ টাকা

সীরাত প্রতিযোগিতায়:

প্রথম পুরস্কার: ৫০ হাজার টাকা

দ্বিতীয়: ৪৫ হাজার টাকা

তৃতীয়: ৪০ হাজার টাকা

এছাড়াও শ্রেষ্ঠ ইমাম ও খামারী ইমামদের ক্ষেত্রেও যথা নিয়মে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।        ।

আরএস