জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, জনগণকে ঐক্যবদ্ধের আহ্বান ফখরুলের

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২২, ০৫:১৯ পিএম

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিকে মরার ওপরে খাড়া ঘা উল্লেখ করে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে জেগে ওঠার ডাক দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (০৬ আগস্ট) সকালে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক ছাত্র সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ভয়ংকর প্রভাব ফেলবে সমগ্র দেশের অর্থনীতির ওপর। এটা বাংলাদেশের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই আর সময় নেই। আমাদের সকলকে জেগে উঠতে হবে, জেগে উঠে এদের (সরকার) পরাজিত করতে হবে। আসুন, আমরা সেই লক্ষ্যে আরো দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলি।

আজকের এই সমাবেশ থেকে আমি আহ্বান জানাই ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন, আপনারা ঐক্য গড়ে তুলুন। রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাই, আসুন জাতির প্রয়োজনে, আমাদের ভবিষ্যতে প্রজন্মের প্রয়োজনে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ সরকারকে সরিয়ে  জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।
সমাবেশে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি বলেছিলেন- জ্বালানি তেলের দাম একটু বাড়ানো হবে। তা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। তার কয়েক ঘণ্টা পরই তেলের দাম ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে  দিয়েছেন।

 তিনি বলেন, জ্বালানি তেলে মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যাবে পরিবহন ব্যয়, পরিবহন ভাড়া। একই সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চাল-ডাল-আটা-তেল আবার দ্বিগুণ থেকে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। 
এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের সাধারণ মানুষ। এভাবে বার বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে, গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে, সোয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার। কারণ, তারা এত মিথ্যাচার করেছে যে, রিজার্ভে এত টাকা আছে, এত ডলার জমা আছে তাদের কোনো চিন্তা কারণ নেই।

আজকে রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে আইএমএফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবির কাছে ডলার ঋণ চেয়েছে। আইএমএফের ডলার ঋণের শর্ত খুব শক্ত। তারা বলেছে, কোথাও কোনো অধিক ব্যয় করা যাবে না। তারা বলেছে, যেসব সমস্ত খাতে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে সেই ভুর্তকিগুলো প্রত্যাহার করা হোক।

বিএনপি নয়, সরকারই চক্রান্ত করছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অন্যায়-অত্যাচার-নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বললে সরকার বলে চক্রান্ত। চাক্রান্ত তো করেন আপনারা। বার বার বলেছি কে চক্রান্ত করছে বলেন। 
আমরা চক্রান্ত করি না। আমরা প্রকাশ্যে ঘোষণা নিয়ে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য জনগণের কাছে যাচ্ছি এবং তাদের নিয়ে আমরা রাজপথে ফয়সালা করব। আমাদের নেতা তারেক রহমান খুব পরিস্কার করে বলে দিয়েছেন ফয়সালা হবে রাজপথে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সরকার দুর্নীতি শুরু করেছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে ফেলেছে। মধ্যরাতে হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম দ্বিগুণ, তিনগুণ বৃদ্ধি করেছে। যে ডিজেলের দাম ৮৮ টাকা ছিল সেটা করেছে ১১৪ টাকা। ৮৯ টাকার পেট্রোল করেছে ১৩০ টাকা। যার ফলে আজকে যানবাহন কমে গেছে।

সমাবেশে ছাত্রদল মহানগর উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম, ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে এই সমাবেশে সমবেত হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় থেকে নয়া পল্টনে কার্যালয়ের সামনে ছাত্র দলের নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে।

ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের পরিচালনায় ছাত্র সমাবেশে বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, আমিরুল ইসলাম আলীম,  সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শহিদুল ইসলাম বাবুল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ছাত্র দলের রাশেদ ইকবাল খান, আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আখতার হোসেন প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।


আমারসংবাদ/টিএইচ