আইজিপির সঙ্গে বিএনপি‍‍`র বৈঠক দুপুরে

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২২, ১০:৪২ এএম

১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তিতি নিচ্ছে বিএনপি। ইতোমধ্যে রাজশাহী ব্যতিত সবগুলো সাংগঠিনিক বিভাগে টানা গণসমাবেশ সফলভাবে শেষ করেছে বিএনপি। তবে ঢাকার সমাবেশ কতটা সফল হবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। এরইমধ্যে সমাবেশস্থল নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। এ জটিল অবস্থা নিরসনে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে বৈঠক করবে বিএনপি‍‍`র নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় পুলিশ সদর দপ্তরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় পুলিশ সদর দপ্তরে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে বৈঠক করবে। বৈঠকে বিএনপির পক্ষে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন, ‌প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী ও আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল অংশ নেবেন।

বিএনপির নেতারা জানান, ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের স্থান নিয়ে দলের নেতারা পুলিশ প্রধানের সঙ্গে কথা বলবেন।‌ পাশাপাশি বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা, হামলা ও রাতে বাসায় বাসায় তল্লাশির নামে হয়রানির বিষয় নিয়েও কথা বলবেন।

ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুমতি চেয়েছিলো বিএনপি। কিন্তু ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে বলা হয়। সেখানে সমাবেশ করতে ২৬টি শর্তও দিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি সমাবেশের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকেও বিএনপিকে অনুমতি নিতে বলেছে পুলিশ। তবে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে অনড় বিএনপি।

যেসব শর্তে অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো:
১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।  
২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশগেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় Vehicle Scanner/Search Mirror–এর মাধ্যমে সমাবেশস্থলে আসা সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা রাখতে হবে।
৯. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বা সড়কের পাশে মাইক/সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না।

১০. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
১১. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমাবেত হওয়া যাবে না।
১২. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময়ে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
১৩. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে, এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১৪. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৫. সমাবেশ শুরুর ২ (দুই) ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১৬. সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থাতেই সমবেত হওয়াসহ যান ও জন চলাচলে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১৭. পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা, রড ব্যবহার করা যাবে না।
১৮. আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৯. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।
২০. উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
২১. মিছিলসহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না।
২২. পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না।
২৩. সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
২৪. স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সমাবেশ পরিচালনা করতে হবে।
২৫. উল্লিখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২৬. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
 

ইএফ