ইসলামী ছাত্রশিবিরকে উদ্দেশ্য করে বামপন্থিদের বিভিন্ন উত্তপ্ত স্লোগানের প্রতিবাদ ও ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপতৎপরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা।
বৃহস্পতিবার শিবিরের ঢাবি শাখা এক বিবৃতির মাধ্যমে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত দু’দিন যাবৎ আমরা দেখতে পাচ্ছি, তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের প্রথম সভাপতি এটিএম আজহারের বেকসুর খালাস পাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থি সংগঠনগুলো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে সবার যে কোনো বিষয়ে বিক্ষোভ করার কিংবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য প্রকাশের অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এই গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি সব সময় শ্রদ্ধাশীল।
বিবৃতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এসএম ফরহাদ ও সেক্রেটারি মহিউদ্দীন খান বলেন, ‘বামপন্থিদের এই বিক্ষোভ থেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে পুরোনো, পতিত ফ্যাসিবাদের স্লোগান প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। অতীতে স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে যেসব স্লোগান ও রেটরিক ব্যবহার করে ছাত্রশিবিরকে অমানবিকীকরণ করে হত্যার বৈধতা দেওয়া হয়েছিল, তারই পুনরাবৃত্তি করা হচ্ছে। গতকাল বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত বামপন্থিদের বিক্ষোভ মিছিলে ‘বাঁশের লাঠি মিছিল হবে, শিবির তোমার মৃত্যু হবে’—এমন সন্ত্রাসী স্লোগানও দিতে দেখা গিয়েছে। এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে বামপন্থিদের মধ্যে থাকা ছাত্রশিবিরকে হত্যার সুপ্ত হীন জিঘাংসা প্রতিফলিত হয়েছে।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, নতুন বাংলাদেশে ক্যাম্পাসে এহেন হত্যা ও সন্ত্রাসের রাজনীতির পুনরাবৃত্তির অপচেষ্টাকে শিক্ষার্থীরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। গত মঙ্গলবার রাতে বামপন্থিদের মশাল মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া এলাকায় গেলে, সাধারণ শিক্ষার্থীরাই ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দিয়ে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। বুধবার রাতেও তারা একই এলাকায় গেলে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দিতে দেখা গেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই প্রতিবাদ এবং যে কোনো যৌক্তিক প্রতিরোধকে ‘শিবির’ ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের হত্যাযোগ্য করার এই ফ্যাসিবাদী ধারা সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আমরা আরও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বামপন্থিদের এই বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিভিন্ন ধরনের উসকানি দেওয়া হচ্ছে। দুঃখজনক বিষয় হলো, বামপন্থিদের এই মিছিলে দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের অন্যতম সহযোগী সংগঠন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কয়েকজন নেতাকর্মীকেও অংশ নিতে দেখা গেছে, যারা উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা বলতে চাই, বামপন্থিদের চলমান বিক্ষোভ থেকে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক ও সহাবস্থানের পরিবেশ নষ্ট করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
শিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই সংগঠনগুলোর গ্রহণযোগ্যতা ও সমর্থন না থাকায় তারা সবসময় ডাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনীহা প্রকাশ করে এসেছে। আমরা চলমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি আসন্ন ডাকসু নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করছি। ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চলমান অগ্রগতি থামিয়ে দিতে এই ধরনের অপচেষ্টাকে শিক্ষার্থীরা ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছে।
ইএইচ