সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ
জীবদ্দশায় একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর পদে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে বিএনপি একমত জানিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) মতো আর কোনো বডি নির্বাহী ক্ষমতার কর্মকাণ্ডে বাধাগ্রস্ত করে বা ইন্টার ফেয়ার করে, বা ব্যবস্থা থাকলে আমরা সে প্রস্তাবটা গ্রহণ করবো না।
তিনি বলেন, এনসিসির মতো ব্যবস্থা থাকলে আমরা আগের অবস্থায় থাকবো (প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদে ১০ বছর মানবো না)। বলা যায়, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের ক্ষেত্রে বিষয়টা এখনো আমরা ঐকমত্যে পৌঁছতে পারিনি, পেন্ডিং রয়ে গেলো।
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
বিএনপির এ স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আজকের আলোচনার প্রথম বিষয় সংবিধানের মূলনীতি, দ্বিতীয় বিষয় সাংবিধানিক এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটি (আগে যেটা এনসিসি ছিল) এবং তৃতীয় বিষয় হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী মেয়াদ সংক্রান্ত।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সংশোধিত প্রস্তাব হলো- সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি উল্লিখিত হবে। এটি তারা করবে যারা জনগণের ম্যান্ডেট পাবে। আমরা বলেছি, রাষ্ট্রীয় মূলনীতির সঙ্গে পঞ্চম সংশোধনীতে যে আর্টিকেলগুলো ছিল সেগুলো সংযোজন করবো এবং সমস্যা কমিশনের উপরোক্ত বাক্যগুলো আমরা সংযোজন করবো। তবে এটা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এটা পেন্ডিং রয়ে গেলো।
তিনি বলেন, এনসিসির পরিবর্তে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটি প্রস্তাব করেছে ঐকমত্য কমিশন। সেটি হলো- সদস্যরা (প্রস্তাবিত) প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার (নিম্নকক্ষ), স্পিকার (উচ্চকক্ষ), বিরোধী দলীয় নেতা, প্রধান বিরোধী দল ছাড়া অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর একজন প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি (আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত যোগ্যতাসম্পন্ন), প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। এতে সাতজন দাঁড়ায়। আগে দুইটি বিষয়ে বাদ দিয়েছে সেটি হল তিন বাহিনীর প্রধান ও অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ এ কমিটির আওতাভুক্ত থাকবে না।
দ্বিমত পোষণ করে তিনি বলেন, সংবিধানের নতুন একটা বডি চাচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব সাংবিধানিক পুরুষের জন্য নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন রয়েছে; তার মধ্যে সংস্কার করা হোক। এবং ওইখানে সার্চ কমিটি গঠন করে দেওয়া হোক। নির্বাহী আদেশের মধ্যদিয়ে সেই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে আইনে নিয়োগের ব্যবস্থা থাকবে। সেসব প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা জন্য আইন থাকবে।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। সে বিধানগুলো এখানে সংযুক্ত করতে হবে। সেই আইনগুলো আমরা যদি মানসম্মত করি, সার্চ কমিটিকে যদি সেভাবে নির্ধারণ করি, আইনগুলো সেভাবে প্রণয়ন করতে পারি। এভাবেই রাষ্ট্রের মধ্যে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স হবে।
বিএনপির এ নীতিনির্ধারক বলেন, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন যদি স্বাধীনভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, মুক্ত গণমাধ্যম যদি নিশ্চিত করতে পারি, দুদকসহ অন্যান্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলো যদি আমরা স্বচ্ছ করতে পারি। এগুলোই গণতন্ত্র রক্ষার কবচ হিসেবে কাজ করবে। এগুলো না করে শুধু নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা কমালে সুষ্ঠু রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব হয় না।
আরএস