সভাপতি আমিরুল ইসলাম, মহাসচিব জামাল উদ্দিন

জাতীয় মুফাসসির পরিষদের কমিটি গঠন

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২, ০৪:২৬ পিএম

আগামী পাঁচ বছরের জন্য জাতীয় মুফাসসির পরিষদের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মুহাদ্দিস আমিরুল ইসলাম বেলালী ও মহাসচিব হিসেবে মনোনীত হয়েছেন শায়েখ জামাল উদ্দিন।

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে সংগঠনটির তৃতীয় প্রতিনিধি সমাবেশে পরামর্শ পরিষদের গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়। 

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক বিচারপতি ও জাতীয় মুফাসসির পরিষদের অভিভাবক আব্দুর রউফ, নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, অধ্যক্ষ ড. মাও. নজরুল ইসলাম মারুফ, অধ্যক্ষ মাও. মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস, ড. মাওলানা শহীদুল ইসলাম বারাকাতী।

কুরআনকে কুরআন দিয়ে উপলব্ধি করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান অতিথি বলেন, আপনারা প্রথমেই কুরআন দিয়ে কুরআনকে বোঝার চেষ্টা করবেন। প্রথমেই হাদিসে যাবেন না। কারণ হাদিস অনেক পরে হয়েছে। এ কথা বলার কারণে ইমাম আবু হানিফাকে কাফির উপাধি দেয়া হয়েছিলো। 

ইমাম আজম বলেছেন, রাবীদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যর উপর ভিত্তি করে হাদিসকে সহীহ ও জয়ীফ বলা ঠিক হবে না। যে ঘটনাটা বর্ণনা করা হয়েছে সেটি কী ঘটেছিলো কী না? বা কতদূর ঘটেছিলো? সেটার উপর বর্ণনা নিতে হবে। 

সাবেক বিচারপতি বলেন, কুরআনুল কারীম যাদের বোঝার তৌফিক হয়েছে তারা অনেক সৌভাগ্যবান। কুরআনকে বুঝতে হলে, আল্লাহর একত্বকে দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করতে হবে। শুধু তেলাওয়াত করলে চলবে না। আয়ত্তও করতে হবে। 

কুরআন সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত স্বরুপ। কুরআনের রুহ আছে। কুরআন কথা বলে। যদি কুরআনকে জিজ্ঞেস করেন আপনি আগে কোথায় ছিলেন, তিনি উত্তর দেন, লাওহে মাহফুজে।

আপনাকে কে নিয়ে এসেছে,  রুহুল আমিন। আপনি পৃথিবীতে কার কাছে এসেছেন, মুহাম্মদ (সা.) এর কাছে। আল্লাহর পক্ষ থেকে কী নিয়ে এসেছেন?  কুরআন বলে, আমার মাঝে সমস্ত সৃষ্টির বর্ণনা রয়েছে। 

আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন, মানুষ আমার রহস্য উদঘাটন করবে আর আমি মানুষের মাঝে আমার সকল রহস্য দিয়েছি ৷ 

সমস্ত সৃষ্টি অনুধাবন করার শক্তি আল্লাহ মানুষকে দিয়েছেন। মানুষের মনের গতি বোঝার ক্ষমতা কারো নেই। তাই মানুষকে কোন সৃষ্টি বুঝতে পারে না। ইসলাম মৃত্যুকে গ্রহণ করে না। 

মৃত জিনিসের সাথে ইসলামের সম্পর্ক নেই। মৃত্যুর মাধ্যমে মানুষের নতুন জীবন শুরু হয়। তাই এটাকেও মৃত্যু না বলে আরেকটি জীবনের দিকে ধাবিত হওয়া বলা যায়।

মুফাসসিরদের কুরআনের অনুবাদকে বাংলাভাষী পাঠকদের বোধগম্য করে উপস্থাপনের ব্যাপারে তিনি বলেন, কুরআনুল কারীমকে সাধারণ মানুষের কাছে সহজভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেছেন, কুরআনকে আমি সহজ ভাষায় অবতীর্ণ করেছি। আল্লাহ আপনাদের কুরআনের তাফসীর করার যোগ্যতা দিয়েছেন। 

সেজন্য আপনাদের আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে। আমাদের দেশে কুরআনের তাফসীর করা হচ্ছে কবিতার ছলে। আবার ইংরেজিতে যেগুলো করা হয়েছে সেটিও শেক্সশিয়ারের সাহিত্যর মতো করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সেজন্য কুরআনের যে মাহাত্ম্য সেটা সেখান থেকে বোঝা যায় না। কাজেই আপনারা একটা স্ট্যান্ডার্ড বাংলা তরজমা করেন। 

আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আমি খেলাচ্ছলে কোন কিছু ই করিনাই। অতএব আল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাসেজ গুলো বোধগম্যতার আলোকে তৈরি করুন। যেমন সূরা আলাকের অনুবাদ করা হয় পড়ো তোমার প্রভুর নামে। 

এভাবে আরবির মতো অনুবাদ না করে প্রথমে প্রভুর নামটাকে আগে আনা যেতে পারে। কারণ আল্লাহর নামটা হচ্ছে মূখ্য আর পড়ো হচ্ছে গৌণ তাই অনুবাদ হবে, তোমার প্রভুর নামে পড়ো।

সংগঠনটি প্লানিং সেলের ৫ জন সদস্যর পরামর্শে মহাসচিব হিসেবে শায়খ জামাল উদ্দিনকে মনোনীত করা হয়েছে। 

পরামর্শ পরিষদের ১৫৫ জন সদস্যর অনুমতিক্রমে ১৫ জনের নতুন নির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় ও জেলা কমিটিগুলো সম্পন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছেন সংগঠনটি ২য় বারের মতো নির্বাচিত সভাপতি।

 

টিএইচ