জীবনে অনেক রোজা কাজা হয়েছে, করণীয় কী

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৪, ০১:৩৩ পিএম

পবিত্র মাহে রমজানের রোজা ফরজ ও ইসলামের অন্যতম রুকন। শরিয়তসম্মত ওজর বা অপারগতার কারণে রোজা রাখতে না পারলে পরে কাজা আদায় করে দিতে হয়। মুসাফির, অসুস্থ, গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী নারীর রোজা না রাখার অবকাশ রয়েছে। তবে পরে যেকোনো সময় নিজের সুবিধামতো সময়ে (লাগাতার জরুরি নয়) কাজা করে নিতে হবে।

মাসিক ঋতুস্রাব ও সন্তান প্রসব পরবর্তী স্রাবের সময় না রাখা রোজাও পরে প্রত্যেকটি রোজার জন্য একটি করে কাজা করতে হবে। এসব রোজার কাফফারা প্রয়োজন নেই। (সুরা বাকারা: ১৮৫; তিরমিজি: ৭১৫; আল-মাজমু: ৬/১৬৭; আল-মুগনি: ৪/৪০৮; আল-লুবাব: ১/১৭৩)

তবে, সুস্থ অবস্থায় ইচ্ছাকৃত রোজা না রাখা বা ভেঙে ফেলা মারাত্মক গুনাহের কাজ। যারা জীবনে অনেক ফরজ রোজা অবহেলা করে রাখেনি অথবা ভেঙে দিয়েছে, অথবা দ্বীনের বুঝ না আসায় রোজার গুরুত্ব দেয়নি, তারা অতীতের রোজাগুলোর কাজা ও কাফফারা কীভাবে আদায় করবে—জানতে চান অনেকে।

এর উত্তরে কয়েকটি অভিমত দেখা যায়। তবে এর মধ্যে বাস্তবসম্মত ও গ্রহণযোগ্যতার আলোকে ফুকাহায়ে কেরামের একটি অভিমত হলো- বিনা ওজরে যত রোজা ভেঙেছেন প্রত্যেকটির জন্য একটি করে কাজা আদায় করবেন। আর সব রোজার জন্য একটি কাফফারার ৬০ রোজা আদায় করবেন। যেটি পেছনের সব রোজার জন্য যথেষ্ট হবে। প্রতিটির জন্য ভিন্ন ভিন্ন কাফফারা আদায় করতে হবে না।

তবে বিনা ওজরে রোজা ভাঙা অনেক বড় অন্যায়, এটা মনে রাখতে হবে। কেননা রমজানের রোজার যথাযথ ক্ষতিপূরণ কোনোভাবেই সম্ভব হয় না। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সফর অথবা অসুস্থতা ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবেই রমজানের কোনো রোজা ভঙ্গ করবে সে আজীবন রোজা রাখলেও এর সত্যিকারের বদলা হবে না (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৯৮৯৩)

সুতরাং সতর্ক থাকতে হবে, যেন সামনে এমন না হয়। আর পেছনের ভুলের জন্য কাজা-কাফফারার পাশাপাশি তওবা-ইস্তিগফার করে নিতে হবে। (কিতাবুল আসল: ২/১৫৩; খুলাসাতুল ফতোয়া: ১/২৬০; আলবাহরুর রায়েক: ২/২৭৭; আদ্দুররুর মুখতার: ২/৪১৩)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের সবগুলো রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর সকল হুকুম যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এইচআর