‘লিওনেল মেসি হ্যাজ শেকেন হ্যান্ডস উইথ প্যারাডাইস।’ ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে লুসাইল স্টেডিয়ামের প্রেস বক্সে বসে এই কথাগুলো বলেছিলেন জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার পিটার ড্রুরি। কথাটি তখন কাব্যিক মনে হলেও এখন অনেকটাই বাস্তব। সেদিন সত্যিই স্বর্গের দরজায় হাত রেখেছিলেন লিওনেল মেসি। আজ তাঁর ৩৭তম জন্মদিন।
১৯৮৭ সালের এই দিনে আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে জন্ম নেন ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত চরিত্রদের একজন। বাবা জর্জ মেসি ও মা সেলিয়া কুচেত্তিনির তৃতীয় সন্তান হিসেবে জন্ম নেওয়া মেসির শৈশব কেটেছে চরম সংগ্রামে। ১১ বছর বয়সে ধরা পড়ে গ্রোথ হরমোনজনিত জটিলতা। পরিবারের পক্ষে চিকিৎসা চালানো সম্ভব ছিল না। সেখান থেকেই শুরু এক রূপকথার যাত্রা।
স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা এগিয়ে এলো। মেসির চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নিল তারা। বার্সার জার্সিতে কিশোর মেসি বদলে যেতে থাকেন কিংবদন্তিতে। ২০০৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে অভিষেক, এরপর যা করেছেন, তা শুধু পরিসংখ্যান নয়—একটি শিল্পমাধ্যম।
জাতীয় দলের জার্সিতে পথটা সহজ ছিল না। ২০০৬ বিশ্বকাপে প্রথম গোলের দেখা, ২০০৮ অলিম্পিকে সোনা, এরপর দীর্ঘ প্রতীক্ষা। একের পর এক কোপা আমেরিকার ব্যর্থতা, বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে যাওয়ার হতাশা, সমালোচনা—সব পেরিয়ে অবশেষে ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা, আর ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ—সবকিছু যেন পরিপূর্ণতা পেলো।
মেসি এখন বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ ম্যাচ, সর্বোচ্চ মিনিট খেলা- খেলোয়াড়। পাঁচ বিশ্বকাপে অ্যাসিস্ট, গোল, অধিনায়কত্বের রেকর্ড সবই নিজের করে নিয়েছেন। গোল্ডেন বল হাতে নিয়ে তাঁর সেই হাসি শুধু একটি শিরোপা জয়ের নয়, একটি অধ্যায়ের পূর্ণতার হাসি।
রোজারিওর ছোট্ট ছেলেটি আজ অমরত্বের গায়ে জড়িয়ে ৩৭ বছরে পা রাখলেন। তাঁর পায়ের ছোঁয়ায় ফুটবল শুধু খেলা নয়, হয়ে উঠেছে যেন কবিতা।
বিআরইউ