চাওয়া হঠাৎ গণবিস্ফোরণ

আবদুর রহিম প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২২, ০১:৪৬ এএম

পূর্ব ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনের ডাক দেয়ায় ক্ষুব্ধ মাঠপর্যায়ের নেতারা। যারা ঘোষণার মাধ্যমে পরিস্থিতিকে ঝুঁকিতে ফেলছেন তাদের সরকারের দালালও বলা হচ্ছে। আগ থেকেই হুঙ্কারের কারণে আন্দোলন ঠেকাতে সরকার প্রস্তুতি নিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আন্দোনের বার্তা কিংবা ছক আগে থেকে শুধু কর্মসূচি বাস্তবায়নে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকবেন তাদেরই জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

যেকোনো ছোট কর্মসূচির মাধ্যমে হঠাৎ গণবিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব। অল্প সময়ের নোটিসে মাঠপর্যায়ের নেতারা উপস্থিত হলে সাধারণ মানুষও রাস্তায় নেমে আসবে। সরকারবিরোধী যেসব দল আছে তারাও বিএনপির সাথে যোগ দেবে। দ্বাদশ নির্বাচনের আগে দলের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নেতাদের আরো সতর্ক হয়ে কথাবার্তা বলা পরামর্শও হাইকমান্ড থেকে এসেছে।

গতকাল নয়াপল্টন বিএনপির কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতার সাথে কথা হয় উল্লিখিত বিষয়গুলোতে মাঠপর্যায়ের নেতাদের থেকেও কথা এসেছে এবং দলের হাইকমান্ড তারেক রহমানের পক্ষ থেকেও যেসব নির্দেশনা ছিল তা জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

এসময় দলের যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদক, বিএনপি-ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতারা এবং কেন্দ্রীয় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি/আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ঢাকা মহানগরীর শীর্ষ দুজন নেতার সাথে কথা হয় আমার সংবাদের।

তারা বলেন, সমপ্রতি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেছেন ১০ তারিখের পর দেশ চলবে খালেদা জিয়ার নির্দেশে। ঢাকা শহরের পরিস্থিতি সেদিন কেমন হতে পারে তা আগে থেকেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

এছাড়া দলের মহাসচিবের কিছু বক্তব্যও নোটে নেয়া হয়। এসব বক্তব্যের কারণে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে বাধা দেয়ার জন্য পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে ফেলে। যার বাস্তবায়ন দেখা গেছে ময়মনসিং ও রংপুরে। তিন দিন আগ থেকেই গাড়ি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সরকারি দলের নেতারা মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে হামলা করেছে, বাধা দিয়েছে। ভবিষ্যতে আন্দোলন বা কর্মসূচির ক্ষেত্রে সতর্কতার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যদি ঢাকা শহরে বড় কর্মসূচির টার্গেট থাকে তাহলে আগেই যেন বিভাগীয় সাংগঠনিক নেতাদের মাধ্যমে জেলায় বার্তা পৌঁছে দেয়া হয়। প্রয়োজনে টার্গেট অনুসারে নেতাকর্মীরা রাজধানীতে পৌঁছলে কৌশলভিত্তিক ধাপে ধাপে কর্মসূচি দেয়া যেতে পারে। সাদামাটা কর্মসূচির মাধ্যমে হঠাৎ গণবিস্ফোরণই মাঠপর্যায়ের নেতাদের প্রধান চাওয়া।

আরো জানা যায়, ঢাকা সমাবেশ ও আগামীতে বিএনপির অবস্থান নিয়ে দলের হাইকমান্ডদের বার্তা ও কৌশল পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হবে না। এর জন্য রাজপথে অবস্থান ও সরকারকে বাধ্য করার জন্য আগামী ১০ তারিখ হবে বিএনপির জন্য টেস্ট কেস। রাজধানীতে ঢুকতে সরকারি দলের ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর বাধা এলে কোন কৌশল অবলম্বন করতে হবে তা আগে থেকেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব মির্জা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকরা দেখছেন, আমরা কেমন প্রস্তুত হচ্ছি। এই সরকারকে সরিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করাই আমাদের টার্গেট। আর আমাদের কর্মসূচির মাধ্যমে এটি প্রমাণিত— এই সরকার সরে যেতে বাধ্য হবে।

তিনি সরকারি দলের উদ্দেশে বলেন,  আপনারা বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে দেন না কেন, কেন আপনারা পরিবহন বন্ধ করে দেন, কেন আপনারা গুণ্ডাদেরকে লেলিয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষ যারা সভায় আসতে চায় তাদের আঘাত করেন কি কারণে? একটাই মাত্র কারণ— তারা জানে যে, গণতন্ত্র যদি ঠিকমতো চলে, জনগণ যদি ভোট দিতে পারে, রাজনৈতিক দলগুলো যদি কাজ করতে পারে তাহলে তারা কোনো দিনই ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারবে না।’