দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২৪, ০১:০৩ এএম
  • স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা উপেক্ষিত
  • প্রতিদিন গড়ে ২০ জন শনাক্ত
  • শঙ্কার কারণ জেএন.১ উপধরন
  • তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ টিকা কার্যক্রম চলছে

শীতের চেয়ে গ্রীষ্মকালে করোনা সংক্রমণ বেশি হয়। সংক্রমণ প্রতিরোধে কর্মকৌশল নতুন
করে সাজাতে হবে

—অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ
জনস্বাস্থ্যবিদ

দেশে আবারও করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য মতে, প্রতিদিন গড়ে ২০ জনেরও বেশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনায় চলতি বছর মৃত্যু হয়েছে চারজনের। বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ করোনার নতুন উপধরন জেএন.১। এটি করোনার ওমিক্রন ধরনের একটি উপধরন। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, জেএন.১ উপধরনটি নিয়ে উদ্বেগ আছে। কারণ, এটি অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রাখে। যেসব অঞ্চলে বা দেশে শীতকাল আসন্ন বা শীতকাল চলছে, সেসব দেশে শীতকালীন ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ জেএন.১ এর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে। সামপ্রতিক সময়ে দেশে জেএন.১ উপধরনের আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্তের কথা জানিয়েছে আইইডিসিআর। করোনায় আক্রান্ত ছয়জনের নমুনা পরীক্ষায় পাঁচজনের জেএন.১ শনাক্ত হয়েছে। ঢাকা মহানগর ও ঢাকার পাশের একটি মহানগরের রোগীর নমুনা পরীক্ষায় এই উপধরন ধরা পড়েছে। 

এদিকে দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরামর্শ অনুযায়ী দেশেও ঢাকার ৯ কেন্দ্রে করোনার তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। করোনা টিকা প্রাপ্তিতে প্রাধান্য পাচ্ছে সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী, ৬০ বছর বা এর বেশি বয়স ব্যক্তি, ১৮ বছর বা এর বেশি বয়সি দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভোগা যে কোনো ব্যক্তি, স্বল্প রোগ প্রতিরোধক্ষমতাসম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ও গর্ভবতী নারী। 

এছাড়াও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে যেমন হাসপাতাল, চিকিৎসাকেন্দ্র এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের সতর্কতা হিসেবে মাস্ক ব্যবহার করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ পরামর্শ কোথাও মানতে দেখা যাচ্ছে না। দেশে করোনা সংক্রামণ ও মৃত্যু নিয়ে আমার সংবাদের এ প্রতিবেদক কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদের সাথে। 

তিনি বলেন, বিশ্বজুড়েই করোনায় জেএন.১ শনাক্ত হওয়ায় করোনা নিয়ে নতুন করে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশও এ ধরন শনাক্ত হয়েছে। আমাদের করোনা সংক্রমণ মাত্র শুরু হয়েছে। শীতকালের চেয়ে গ্রীষ্মকালে আমাদের দেশে করোনা সংক্রমণ বেশি হয়। আমাদের কর্মকৌশল বাস্তবায়নে কাজ শুরু করা প্রয়োজন। আগের কর্মকৌশল যেগুলো আছে সেগুলোকে পুনরায় উজ্জীবিত করতে হবে। আমাদের অবশ্যই জানতে হবে কে কোথায় আক্রান্ত হচ্ছেন। কোন ধরনে আক্রান্ত হচ্ছে। সংক্রমণ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা জানা জরুরি। সংশ্লিষ্টদের শুধু নির্দেশনা দিয়েই কাজ শেষ করলে হবে না। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটাও মাঠ পর্যায়ে দেখতে হবে। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ৮ মার্চ ২০২০ সালে।  করোনা মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৮১ জনের আর সংক্রমিত হয়েছেন ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৮২৩ জন।