এক মাসেও নির্দেশনার বাস্তবায়ন নেই

মো. ইমরান খান প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৪, ০৩:১৩ এএম

নির্দেশ দিয়েছি, না মানলে শাস্তির আওতায় আনা হবে 
—জাহাঙ্গির আলম, মুখপাত্র  আইডিআর

বিমা গ্রাহকদের যেকোনো অভিযোগ কিংবা বিমা দাবি সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিলেও তা পালন করছে না বিমা কোম্পানিগুলো। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক গ্রাহকের পলিসি পরিপক্ব হলেও দীর্ঘ দিন বিমা দাবি নিয়ে ঘুরছেন তারা। এতে কোনো সাড়া নেই কোম্পানিগুলোর। গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) গ্রাহক ও বিমা কোম্পানির দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্দিষ্ট করে গত ২০ ফেব্রুয়ারি নীতিমালা জারি করে। বিমা গ্রাহক সুরক্ষা গাইডলাইন বা নীতিমালায় এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশনার এক মাস পেরিয়ে গেলেও নীতিমালার তোয়াক্কা করছে না কোম্পানিগুলো। 

গ্রাহকদের এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট বিমা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে বিমা কোম্পানি তাদের অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া এবং এ সংক্রান্ত গৃহীত কার্যক্রম গ্রাহকসহ জনসাধারণের অবগতির জন্য বুকলেট বা গ্রহণযোগ্য মাধ্যমে প্রচার করা এবং একই সঙ্গে ওয়েবসাইটে বিশেষভাবে প্রদর্শন নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রাহকদের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে তিন সদস্যবিশিষ্ট যে কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা মানেনি কোনো কোম্পানিই। তবে কিছু কিছু কোম্পানি অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াটি গ্রহণযোগ্য মাধ্যমে প্রকাশ করলেও অধিকাংশ কোম্পানি মানেনি নির্দেশনা। এখনো গ্রাহকদের দেয়া হচ্ছে মুখরোচক আশ্বাস যা বিমা সম্পূর্ণ বিমা পলিসি পরিপন্থি। নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিমা পরিকল্পনা বা পলিসি আইডিআরএ অনুমোদিত হতে হবে। গ্রাহকের কাছে বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অনুমোদিত  পলিসিতে কোনো ব্যত্যয় করা যাবে না। বিমা পলিসির দলিলে বিমাকারীর নাম, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নম্বর, যোগাযোগের প্রকৃত ঠিকানা, পলিসির নাম, শ্রেণি ও প্রকার ইত্যাদির বর্ণনা এবং কর্তৃপক্ষের নাম ও ঠিকানা থাকতে হবে।

গ্রাহককে এমন কোনো ধারণা বা আশ্বাস দেয়া যাবে না যা বিমা পলিসিতে নেই। গ্রাহকের লিখিত সম্মতি ছাড়া বিমা চুক্তিতে কোনো প্রকার পরিবর্তন করা যাবে না। পলিসি মেয়াদপূর্তি বা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ বা জরিমানা অথবা কোনো বিনিয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত ঝুঁকি থাকলে তা বিমা গ্রাহককে পলিসি বিক্রির আগেই অবহিত করতে হবে। নতুন নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বিমা পলিসি বিক্রির রসিদ ১৫ দিনের মধ্যে ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিমাকারীকে ইস্যু ও সংরক্ষণ করতে হবে এবং সেই রসিদ গ্রাহককে ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল মাধ্যমে পাঠাতে হবে। বিমাকারী বা এজেন্ট গ্রাহকদের সব তথ্য সংরক্ষণে উপযুক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আদালতের আদেশ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের আইনানুগ চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা যাবে। 

সূত্র মতে, প্রায় ৮০টি কোম্পানির মধ্যে ১৯টি কোম্পানি ৮০ থেকে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত বিমা দাবি পরিশোধ করছে। ১০টি কোম্পানি ৭০ শতাংশের ওপর দাবি পরিশোধ করছে। এ বিষয়ে আইডিআরএর মুখপাত্র জাহাঙ্গির আলম দৈনিক আমার সংবাদকে জানান, ‘আইডিআরের নির্দেশনা কোনো বিমা কোম্পানি মানতে চায় না; তাদেরকে মানাতে হয়। আমরা নির্দেশ দিয়েছি না মানলে শাস্তির আওতায় আনা হবে। আইডিরআরএ তার নির্দেশনার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’