জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে আনসার বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও পাঁচটি নতুন ব্যাটালিয়ন। সম্পূর্ণ পুরুষ কেন্দ্রিক এই ব্যাটালিয়নগুলো নির্বাচনি নিরাপত্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে জানা গেছে।
গতকাল শুক্রবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন কৌশলগত অঞ্চলে এই ব্যাটালিয়নগুলো মোতায়েনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এর মধ্যে ঢাকার জন্য একটি, বরিশাল সদর, চট্টগ্রাম, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকা এবং কক্সবাজারের উখিয়া— প্রতিটি স্থানে একটি করে ব্যাটালিয়ন দায়িত্ব পালন করবে।
প্রতিটি ব্যাটালিয়নে থাকবেন ৪২৫ জন কর্মকর্তা ও সিপাহি। নতুন এই উদ্যোগে ২ হাজার ১২৫টি স্থায়ী পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে পরিচালক, উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক মিলিয়ে ২০টি পদ থাকবে বিসিএস আনসার ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য।
প্রস্তাবিত কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে— ৫ জন পরিচালক, ৫ জন উপপরিচালক, ১০ জন সহকারী পরিচালক, ২০ জন সার্কেল অ্যাডজুট্যান্ট, ৯০ জন সুবেদার, ১০০ জন নায়েব সুবেদার, ১২০ জন হাবিলদার, ২০০ জন নায়েক, ৩৯০ জন ল্যান্স নায়েক, ১ হাজার ১৮০ জন সিপাহি এবং ৫ জন নার্সিং সহকারী।
বর্তমানে আনসার বাহিনীতে রয়েছে ৪২টি ব্যাটালিয়ন। যার মধ্যে ৩৯টি পুরুষ, ২টি নারী এবং ১টি আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন (এজিবি)। সাধারণত সদস্যরা ছয় মাসের প্রশিক্ষণ পান। তবে নির্বাচনের আগে দ্রুত মাঠে নামানোর জন্য নতুন ব্যাটালিয়নগুলোকে প্রয়োজনে চার মাসের সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রয়োজনে সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক বন্ধের দিনেও প্রশিক্ষণ চালু রাখা হতে পারে।
আনসার কর্মকর্তাদের মতে, ৩৯তম ব্যাটালিয়ন সৃষ্টির পর প্রায় এক দশক ধরে নতুন কোনো ব্যাটালিয়ন গঠন হয়নি। এ সময়ের মধ্যে রূপপুর ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, উখিয়াসহ বেশ কয়েকটি কৌশলগত স্থাপনায় বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করতে হয়েছে। ফলে নির্বাচনি দায়িত্বের জন্য পর্যাপ্ত জনবল মজুত রাখা সম্ভব হয়নি।
এছাড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়, ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানে প্রতিদিনই গড়ে ১০-১২ জন করে আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করেন, যা মাঠ পর্যায়ে সৈনিক সংকটকে আরও তীব্র করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, জনবল সংকট মোকাবিলা ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নতুন পাঁচ ব্যাটালিয়ন গঠন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এতে নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, বিশেষ অভিযান পরিচালনা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পাহারায় আনসারের সক্ষমতা বহুগুণে বাড়বে।