বিদ্যালয় যাওয়ার পথে নওশিন দেখতে পায় একটি ফুলের বাগানে বেশ কিছু রঙ বেরঙের ফুল ফুটে আছে। ফুলগুলো দেখতে তাজা খুবই সুন্দর। নওশিনের খুবই ভালো লাগলো। কারণ,নওশিন ফুল খুবই ভালোবাসেন। নওশিনের মন খারাপ হলে ফুল দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। নওশিনের মনে ভাবনা জাগলো আমি যদি বাড়ির উঠোনে একটি ফুল বাগান করি তাহলে তো খুব ভালো হবে। প্রতিদিন নানা রকম ফুল ফুটবে।
দেখতে সুন্দর দেখাবে ফুলের উপর ভ্রমর এসে বসবে। সেই উদ্যেগ নিয়ে মনে মনে কাউকে কিছু না বলে সেখানে ফুল গাছের চারা রোপণ করবে সেই স্থানটি পরিষ্কার পরিছন্ন করল। নওশিনের মা ডাক দিয়ে বলল মা এখানে তুমি কি করবে? নওশিন মুচকি হাসি দিয়ে বলল কিছু নয় আম্মু। বিদ্যালয় ছিল সেদিন বন্ধ শুক্রবার ছিল। এবার নওশিন ভাবছে আমার পছন্দের ফুলের চারা রোপণ করব না-কি সব ফুলের চারা একটা একটা করে রোপণ করব।
এই ভেবে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেল, শেষ পর্যায়ে পছন্দের ফুলের সঙ্গে অন্যান্য দু একটি ফুলের চারা কিনবে সিদ্ধান্ত নিল। পরদিনও বিদ্যালয় বন্ধ তাই পাশের খুব কাছের বান্ধবী নীহা কে আসতে বললাসকালবেলা। দুজনে একসঙ্গে ফুলের চারা কিনতে যাবে। যথাসময়ে নীহা নওশিনের বাসায় আসল। দুজনে প্রস্তুতি নিয়ে চলে গেল ফুলের চারা কিনতে। বাবা ডাক দিয়ে বললো নওশিন মা কোথায় যাও। নওশিন জবাবে বলল বাবা এই তো পাশের ফুল বাগানে যাচ্ছি। বাবা বললো আচ্ছা মা দেখেশুনে যেও।
তাড়াতাড়ি আসিও,আচ্ছা বলে নীহা সহ রাস্তায় বের হয়ে কিছুদুর হাঁটতেই দেখা হলো বিদ্যালয়ের মনির স্যারের সঙ্গে স্যারকে দেখতে পেরে আমরা সালাম দিলাম খোঁজ খবর নিলাম। স্যার বলল নওশিন নীহা দুজনে তোমরা সকাল বেলা কোথায় যাচ্ছ? জবাবে নওশিন বলল স্যার বাড়ির উঠোনে ফুলের গাছ লাগাবো তাই গাছ কিনতে যাচ্ছি। ওহ নওশিন খুব ভালো উদ্যেগ নিয়েছো শুভকামনা রইলো? দেখেশুনে যেও ঠিক আছে। নীহা বললো আচ্ছা স্যার।
এবার না হেঁটে রিকশায় উঠল চলে গেল ফুল বাগানে রিকশা থেকে নেমে দারোয়ান গেট খুলে দিল আমরা ভিতরে গেলাম। গিয়ে দেখি বাগানের মালিক নিজে নিজে ফুলের পরিচর্যা করছেন? আমরা গিয়ে সালাম দিয়ে বলে উঠি। আমরা ফুলের চারা কিনতে এসেছি ফুল গাছ লাগাবো। বাগানের মালিক বলল কি কি ফুলের গাছ নিবে মা বলো।
আগে ঠিক করে নিয়েছিল কি কি ফুলের চারা রোপণ করবে? নওশিন বলল গোলাপ, গাদা, টগর, রজনীগন্ধা, গন্ধরাজ, গেট, জনা সহ অন্যান্য আরো ফুলের গাছের নাম বললো। বাগানের মালিকসব চারাগাছ দিল এবং কিভাবে রোপণ করবে পরিচর্যা করবে বলে দিলেন। মনটা হাসি খুশিতে ফুলের চারাগুলো নিয়ে বাড়িতে ফিরছেন। অনেক চারা গাছ তো নওশিন নীহার নিতে কষ্ট হচ্ছিল। গাড়িতে নিয়ে বাড়ি ফিরলো নওশিন নীহা।
নওশিনের বাবা দেখে বললো মা এত ফুলের গাছ কি করবি? নওশিন বলল বাবা গতকাল এই স্থানটি পরিষ্কার করেছি এখানে রোপণ করবো। ফুল আমার খুবই পছন্দ। নওশিনের বাবা বলল আচ্ছা ঠিক আছে মা। এই বলে চলে গেল ফুল বাগানের মালিকের কথা অনুযায়ী ফুলের চারা নীহাসহ রোপণ করা শুরু করে দিলাম? বেশ কিছুক্ষণ পরে ফুলের চারা রোপণ করা শেষ হয়ে গেল। সেখান থেকে বের হয়ে দু’জনে হাতমুখ ধুয়ে একটু নাস্তা করে বাইরে খেলতে বের হলাম। সকাল গড়িয়ে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল গাছের গোড়ায় পানি দিয়ে যে যার বাড়ি চলে গেলাম। পরদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি গাছগুলো শিশির কণায় ভিজে সতেজ হয়েছে।
গাছগুলো সোজা হয়ে গেছে দেখতে দেখতে কিছুদিন কেটে গেল, হঠাৎ একদিন নওশিন দেখে ফুলের চারা থেকে ফুল ফুটবে তার দেখে মনটা যে খুশি হলো এই আনন্দে নীহাকে ডাকলো সেও দেখে খুবই খুশি হলো? ফুল ফোটা দেখে মনটা খুশিতে নাচতে শুরু করলো।