নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ২২, ২০২১, ১২:৫০ পিএম
ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেছেন, আজকের কুমিল্লার ঘটনায় সেই পূর্ববর্তী ঐতিহাসিক ঘটনার মিল দেখতে পাই। অপারেশন গুলমার্গ, অপারেশন সার্চলাইট এবং কুমিল্লার ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা। তিনটি ঘটনাই মানবতাবিরোধী ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি করে জঙ্গিবাদের পরিস্ফূটন ঘটানো হয়েছে।
১৯৪৭ সালে কাশ্মীরে পাকিস্তানের আগ্রাসনের ‘কালো দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়নে ‘অপারেশন গুলমার্গ এবং অপারেশন সার্চলাইট : পাকিস্তানের পরিকল্পিত গণহত্যা’ শীর্ষক এই সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মুক্তচিন্তা ও যুক্তিবাদ চর্চা ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসএমএমইউ এর অধ্যাপক ডা. অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক বাসুদেব ধর এবং সঞ্চালনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক আমিনুল হক ভুইয়া।
ইকবাল সোবহান বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের দুই মাসের মাথায় কাশ্মীরে সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা দেখা দেয়। মুসলমান হিন্দুকে, হিন্দু মুসলমানকে হত্যা করে। সেই থেকেই কাশ্মিরে অশান্তি চলছে। এরপর ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে লাখো মানুষকে হত্যা করা হয়, ধর্ষণ করা হয়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। সেই ষড়যন্ত্র থেমে নেই। এর ধারাবাহিকতায় কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা করা হয়েছে।
মামুন আল মাহতাব বলেন, দেশ যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে ঠিক সেই সময় কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার সূত্রপাত হল, যা ছড়িয়ে পড়লো সারাদেশে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে ঠিক সেই সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এটি প্রতিরোধ করতে না পারলে উন্নয়ন কাজে আসবে না।
সভাপতি বাসুদেব ধর তার বক্তব্যে কাশ্মীরের ইতিহাস, গুলমার্গে পাকিস্তানী গণহত্যা এবং বাংলাদেশের ২৫ মার্চের কাল রাতে গণহত্যার ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলা এরই ধারাবাহিকতা। দুদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত না হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতাকে রুখতে হবে। পারস্পারিক দোষারোপের কোনো সুযোগ নেই। সাম্প্রদায়িক শক্তির ফাঁদে পা দিলে দুদেশের জনগণই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কালো দিবসের গুরুত্ব সম্পর্কে অন্যান্য বক্তরা বলেন, ১৯৪৭ সালের ২২ অক্টোবর কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য পাকিস্তান গণহত্যা চালায়। এতে ৪০,০০০ এরও বেশি কাশ্মীরি মুসলমান, শিখ ও হিন্দু বর্বর পাক সেনাদের হাতে নিহত হয়েছিল। ১০,০০০ নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং ২০০০ নারীকে জোর করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
আমারসংবাদ/ইএফ