Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

ডাক্তার নেই, ওষুধ নেই, ফিরে যাচ্ছে রোগীরা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মার্চ ২, ২০২০, ১০:২৭ এএম


ডাক্তার নেই, ওষুধ নেই, ফিরে যাচ্ছে রোগীরা

ডাক্তার নেই, ওষধ নেই চিকিৎসা সেবা না পেয়ে বিভিন্ন বয়সী রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন। জনবল সংকট ও সুষ্ঠু তদারকির অভাবে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে মানিকগঞ্জ ঘিওর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র।

১৯৫৬ সালে কুকুরতারা (গোলাপ নগর) গ্রামের মৃত ওয়াজীর আলীর ছেলে মো. ফাজেল আহাম্মদের দ্বারা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো মেরামত বা কোনো ভবন তৈরি করা হয়নি। তখন এর নাম করণ করা হয়েছিল ঘিওর ওয়াজীর আলী দাতব্য চিকিৎসালয়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতায় নিয়ে নামকরণ করেন ঘিওর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র।

এখানে ডাক্তারসহ বিভিন্ন পদে জনবল না থাকায় প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে স্বাস্থ্য উপ-কেন্দ্রের। এতে গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা’সহ গ্রামীণ শিশু, নারী ও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলী জনিত কারণে জনবল শূন্য হয়ে পড়ছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। জোড়াতালি দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা কার্যক্রম। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আশপাশ ও দুরদুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগিদের।

জনবল সংকটের কারণে গর্ভবতী মহিলারা প্রসব সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জরুরী প্রয়োজনে নিয়ে যেতে হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। নিয়মিত তদারকির অভাবে ঝোপঝাড়ের বাসস্থানে পরিণত হয়েছে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।

ঘিওর স্বাস্থ্য উপ-কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ইফ্ফাত জাহান জানান, উপজেলার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে মেডিকেল অফিসার, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট, অফিস সহায়ক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ভিজিটরসহ ৫টি পদ রয়েছে। এর বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৩ জন।

মেডিকেল অফিসার ডা. আসমা, এম.এল.এস.এস মো. শফিকুল ইসলামসহ ২জন ডেপুটেশনে সড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৪০-৫০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন। পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় রোগীদের ওষুধ দেওয়া সম্ভব হয় না।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য উপ-কেন্দ্রে ভবন না থাকায় টিনের ঘরটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পরেছে। বৃষ্টি হলেই ঘরের ভিতরে পানিতে ভরে যায়। চার পাশে প্রাচির না থাকায় আশপাশের লোকজন আস্তে আস্তে জায়গা দখল করে নিচ্ছে।

বুধবার হাটের দিন লোকজন ভিতরে প্রবেশ করে প্রস্রাব, পায়খানা, ধুমপান, রাতের আধারে নেশা জাতীয় জিনিস খেয়ে বোতল ভেতরেই ফেলে রেখে যায়। বৈদুতিক মিটার আছে তার সংযোগ নেই, কোয়াটারের রুমগুলো ব্যবহারের অযোগ্য, পানির সমস্যা, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের চার পাশে ময়লা আবর্জনায় ভরা এ সমস্যার কথা আমার উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নিকট লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে এর সমাধান এখনো হয়নি।

চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মো. রফিকুল ইসলাম ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রথম রোগী মো. মজিবর রহমান বলেন, আমার জ্বর কাশি, এসেছিলাম ঔষুধ নেয়ার জন্য এখানে ঔষধও নেই ডাক্তারও নেই, তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।

ঘিওর ইউপি চেয়ারম্যান মো. অহিদুল ইসলাম টুটুল জানান, অনেক দিন যাবত চিকিৎসক নেই, ওষধও নেই, অন্যান্য পদেও লোক নেই, তাই এই এলাকার মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সঠিক ভাবে দেখভাল না করায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটি ঝোপঝাড়ের জঙ্গলে পরিণত হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৌমেন চৌধুরী সমস্যার কথা স্বীকার করে জানান, আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ডাক্তার সংকট রয়েছে, তাই রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সরকার ডাক্তার নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, এটি প্রক্রিয়াধীন আছে। নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে প্রত্যাকটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তাসহ অন্যান্য পদে জনবল দিতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।

আমারসংবাদ/কেএস