Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা, ফেঁসে গেলেন যুব মহিলা লীগ নেত্রী

গাজীপুর প্রতিনিধি

মার্চ ৭, ২০২০, ০৬:৪৩ এএম


স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা, ফেঁসে গেলেন যুব মহিলা লীগ নেত্রী

গাজীপুরের টঙ্গীর ব্যাপক আলোচিত যুব মহিলা লীগ নেত্রী নাসিমা আক্তার ওরফে নাসরিন দ্বিতীয় স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করে ফেঁসে গেলেন।

মামলার পর জানা গেছে, এই নেত্রী দুই স্বামীর সঙ্গে সংসার করতেন। এমনকি প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়ে অগোচরে দ্বিতীয় স্বামীর সংসার করছিলেন।

পরে বুধবার (৪ মার্চ) রাতে দ্বিতীয় স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দিলেই ফাঁস হয়ে যায় তার দুই বিয়ের খবর।

তবে মামলার আরজিতে নাসিমা আক্তার তার দ্বিতীয় স্বামীকে প্রেমিক বলে দাবি করেন। তিনি জানান, একটানা দশ বছর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং তাকে বিবাহ করার আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণ করতেন তিনি।

পরে শুক্রবার (৬ মার্চ) আসল ঘটনা সামনে এলো। স্থানীয় এক সাংবাদিক নিজের ফেসবুক পেজে তার দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে বিবাহের হলফনামা প্রকাশ করলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। এতে মুখরোচক আলোচনা সমালোচনায় সরগরম হয়ে উঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

বুধবার দ্বিতীয় স্বামীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিনব অভিযোগে থানায় মামলা দিয়ে আলোচনায় আসেন নাসিমা আক্তার। টঙ্গী পূর্ব থানায় দায়েরকৃত আলোচিত ধর্ষণ মামলার (নং-১১) প্রধান আসামি স্থানীয় ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদের প্রার্থী আলী আসগর। মামলার বাদী আলোচিত নেত্রী নাসিমা আক্তার ওরফে নাসরিন স্থানীয় একজন যুবলীগ নেতার স্ত্রীর সাথে ওয়ার্ড যুব মহিলা লীগের সভাপতি পদে লড়ছেন।

নাসরিনের কথিত ‘ধর্ষণ’ মামলার সংবাদ শুক্রবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এরপর নাসিমার নানা তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে আসে।

এরপর অনেকে স্থানীয় সাংবাদিকদের ম্যাসেঞ্জার ইনবক্সে নাসিমার গোপন অডিও, ভিডিও ও স্থিরচিত্র পাঠাতে থাকেন।

একটি চিত্রে দেখা গেছে, নাসিমা একটি রাজকীয় খাটে বসে ফেনসিডিল খাচ্ছেন। আরেকটি ছবিতে নাসিমাকে একজন কেন্দ্রীয় যুব মহিলালীগ নেত্রীর সাথে সেলফি তুলতে দেখা গেছে।

প্রাপ্ত হলফনামায় দেখা গেছে, নাসিমা ও তার পরকীয়া প্রেমিক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলী আসগর বিগত ২০১৬ সালের ২৪ জুন নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তাদের বিবাহের হলফনামা সম্পাদন করেন।

স্থানীয়রা জানান, নাসিমার প্রথম স্বামী জসিম উদ্দিন সুমনও এসব মেনে নিয়েই নাসিমার সাথে দ্বৈতভাবে সংসার করতেন। তাদের সংসারে (নাসিমা-সুমন দম্পত্তি) প্রায় চৌদ্দ বছর বয়সের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। সুমন ও আসগর পরস্পর ‘পুরুষ সতিন’ এবং সমাজ বিরোধী এ জঘন্য কাজের জন্য নাসিমা ও তার দুই পুরুষ সতিনের সমানভাবে বিচার হওয়া উচিত বলেও অনেকে মন্তব্য করেন।

নাসিমা ও তার প্রথম স্বামী সুমনের বিরুদ্ধে আরো অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। তাদের ভাঙ্গারি দোকানে একজন ভবঘুরে টোকাইকে পিটিয়ে হত্যার পর দোকানের ভেতর লাশ ঝুলিয়ে রাখার অপরাধে বিগত ২০১৬ সালে তাদের বিরুদ্ধে সাবেক টঙ্গী থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়।

সম্প্রতি নাসিমার দ্বিতীয় স্বামী আসগরের নেতৃত্বে একজন যুবককে মোবাইল ফোনে তাদের আস্তানায় ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। যুবকটির কান্নার শব্দ যাতে বাহিরে না যায় সেজন্য টর্চার সেলে উচ্চস্বরে সাউন্ড বক্সে গান বাজানো হয়। এ ঘটনায় যুবকটির মুক্তিযোদ্ধা দাদা টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।

স্থানীয় একজন সাংবাদিক ঘটনা জেনে ফেলায় আলোচিত নেত্রী নাসিমা সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য ওই সাংবাদিককে হুমকি দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

এদিকে এসব বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য নাসিমা ও তার দুই স্বামীর সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।

আমারসংবাদ/জেডআই