Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

জমি বিরোধের জেরে লবনচাষীর উপর হামলা

মহেশখালী (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

মার্চ ১২, ২০২০, ০৮:০৯ এএম


জমি বিরোধের জেরে লবনচাষীর উপর হামলা

কক্সবাজারের মহেশখালীর হোয়ানকে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় ছৈয়দ আলম (৪০) নামে এক লবণ চাষী গুরুতর আহত হয়েছেন।

বুধবার (১১ মার্চ) বেলা দেড়টার দিকে হোয়ানক ইউনিয়নের রাজুয়ার ঘোনার পশ্চিমে বদরঘোনা নামক লবণ মাঠে এই ঘটনা ঘটে, এ ঘটনায় সৈয়দ আলমের দু'টি হাত ভেঙ্গে দেয় স্বশস্ত্র বাহিনীরা।

আহত ছৈয়দ আলম মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের বড়ছড়া গ্রামের মাওলানা ছিদ্দিক আহমদের ছেলে। তাকে গুরুতর অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত কেউ এখনো আটক হয়নি। সদ্য জেলফেরত ওসমান বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করছেন আহতের স্বজনরা।

স্থানীয় সূত্রমতে ইউনিয়নের হোয়ানক মৌজার আরএস ৫০ নাম্বার খতিয়ানের জমি নিয়ে দু'টি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। যা নিয়ে মামলা কক্সবাজার সহকারী জজ ১ম আদালতে বিচারধীন রয়েছে। ওই বিষয় নিয়ে মহেশখালী থানায় কয়েকবার শালিশী বৈঠকও হয়েছে এবং শালিশী বৈঠকে উভয়পক্ষকে আদালতের নির্দেশনা মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, আদালত ও মহেশখালী থানার নির্দেশ অমান্য করে জেল থেকে সদ্য মুক্তি পেয়ে হোয়ানক রাজুয়ার ঘোনার মৃত মুজাহের মিয়ার ছেলে ওসমানের নেতৃত্বে তার ভাই মোহাম্মদ হোসেন ওরফে বাইশ্যাসহ একদল স্বশস্ত্র বাহিনী আহত লবণ চাষী ছৈয়দ আলমের উপর হামলা চালায়। হামলার এক পর্যায়ে আহত ছৈয়দ আলম অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা ইচ্ছে মতো আঘাত করে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় মাঠেই ফেলে রেখে যায়।

লবণ শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছিদ্দিক আহমদের ছেলে ছৈয়দ আলম লবণ মাঠ দেখতে যান। লবণ মাঠ দেখে চলে আসার পথে লবণ চাষা দেলোয়ারে সাথে কথা বলছিলেন। ওই সময় হঠাৎ সন্ত্রাসিদের জড়ো হতে দেখলে ছৈয়দ আলম আত্মরক্ষার জন্য অন্য লবণ চাষীদের সহযোগিতা কামনা করেন।

সহযোগী লবনচাষীরা জানান, পাশের লবণ চাষিরা ছৈয়দ আলমকে রক্ষার চেষ্টা করলে তাদেরও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সন্ত্রাসিরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন লবণ চাষী বলেন, সন্ত্রাসিরা আগে থেকেই লাঠিসোটা নিয়ে প্রস্তুত ছিল।

এদিকে স্থানীয়রা ছৈয়দ আলমকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে হোয়ানক টাইমবাজার পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

অপরদিকে আহত ছৈয়দ আলমকে প্রথমে মহেশখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।

এ প্রসঙ্গে মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, দুইপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে হামলার ঘটনাটি আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থি তাই লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, ওসমান বাহিনীর লোকজন প্রতিপক্ষকে বিভিন্ন সময় নানামুখি হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। বিষয়টি তারা থানায় অবহিত করে। ঘটনার আশঙ্কা করে মহেশখালী থানায় জিডি করেন হোয়ানকের বড়ছড়ার বাসিন্দা মৃত ফজল আহমদের ছেলে মো. নোমান লেদু। যার নং- ১০৪৪/২০২০। জিডিতে ওসমান বাহিনীর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এরপর গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সদর মডেল থানায় জিডি করেন সরকারি বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের শিক্ষক মাহবুবুর রহমান। যার নং-১১৩২/২০২০। জিডিতে কারাফেরত ওসমানসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আমারসংবাদ/কেএস