Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

গৌরীপুর জংশনে রাতের ট্রেন যাত্রীদের দুর্ভোগ

মো. হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)

মার্চ ১৩, ২০২০, ১১:০০ এএম


গৌরীপুর জংশনে রাতের ট্রেন যাত্রীদের দুর্ভোগ

ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন থেকে রাতের ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রীদের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। স্টেশন হয়ে রাতে চলাচলকারী অধিকাংশ ট্রেনের বগিতে বাতি না থাকায় অন্ধকারে যাত্রীরা আতঙ্কে থাকেন। পাশাপাশি স্টেশনের বিশ্রামাগার রাতে বন্ধ থাকায় যাত্রীদের শুয়ে থাকতে হয় অন্ধকার প্লাটফরমে। স্টেশনে খাবার পানি ও শৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকায় নারী যাত্রীরা সবচেয়ে ভোগান্তির শিকার হন।

গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, বিশ্রামাগার বন্ধ থাকায় যাত্রীরা মালপত্র নিয়ে বাইরে আশ্রয় নেয়ায় স্টেশনে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। নারী যাত্রীরা বখাটেদের উৎপাতের শিকার হচ্ছে। এতে করে এই স্টেশনে যাত্রীসেবার মান দিন দিন কমে যাচ্ছে। সেবার মান বাড়াতে এই চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন হয়ে জারিয়া- গৌরীপুর-ময়মনসিংহ, মোহনগঞ্জ- গৌরীপুর-ঢাকা, ময়মনসিংহ- গৌরীপুর-চট্টগ্রাম এই তিনটি রুটে আন্তঃনগর, লোকাল, মেইল ও কমিউটারসহ ৩২টি ট্রেন চলাচল করে। কিন্ত রেলওয়ে জংশনে পর্যাপ্ত যাত্রীসেবা না থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

সরজমিনে বুধবার রাত ১১টায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায় গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফরমটি চারদিকে খোলা। প্লাটফরমের বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা জমে আছে। প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাগার তালাবদ্ধ। বিশ্রামাগারে জায়গা না পেয়ে প্লাটফরমে দাঁড়িয়ে আছে শতাধিক যাত্রী। কোথাও আবার নোংরা প্লাটফরমের মেঝেতে শুয়ে-বসে আছে ট্রেনযাত্রীরা।

স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে গিয়ে দেখা যায় প্লাটফরমের মেঝেতে মালপত্র রেখে যাত্রীরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে শুয়ে আছেন। অনেক যাত্রী ট্রেনের অপেক্ষায় প্লাটফরমের এককোণে গুটিসুটি হয়ে বসে আছেন। এরমধ্যে কয়েকজন নারী ট্রেনযাত্রী বিশ্রামাগার বন্ধ থাকায় স্টেশনের প্লাটফরমে পায়চারি করছেন।

ট্রেনযাত্রী আছমা আক্তার বলেন, ভোররাতে চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনে উঠবো। কিন্তু বিশ্রামাগার বন্ধ থাকায় অন্ধকার প্লাটফরমে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা শুয়ে পড়েছে। কিন্ত নিরাপত্তাহীনতায় আমি ঘুমাতে পারছিনা, ভয় ভয় লাগছে। ট্রেন আসার আগ পর্যন্ত জেগেই থাকতে হবে।

স্টেশনের দ্বিতীয় শ্রেণির বিশ্রামাগারের সামনে গিয়ে দেখা যায় দরজার সামনে রাখা ধাড়ির বান্ডেল। বিশ্রামাগারের ভেতরে মেঝেতে ময়লা-আবর্জনা পড়ে আছে। তালাবদ্ধ শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় যাত্রীরা কেউ ভেতরে বসতে পারছেন না। অপেক্ষমান ট্রেনযাত্রীরা চায়ের দোকানে বসে গল্প-গুজব করে সময় পার করছেন।

ট্রেনযাত্রী মহসীন মাহমুদ বলেন, প্রায়ই পরিবার নিয়ে এই স্টেশন হয়ে ট্রেনযোগে জেলা শহরে যাতায়াত করতে হয়। কিন্ত স্টেশনে নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক শৌচাগার না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

ট্রেনযাত্রী রায়হান উদ্দিন বলেন, রিকশায় চড়ে স্টেশনে আসায় শরীরে ধুলো-বালি লেগেছে। ভাবছি একটু হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হবো। কিন্ত স্টেশনে পানির ব্যবস্থা নেই। এখন নিকটস্থ মসজিদে যাচ্ছি হাত-মুখ ধোয়ার জন্য।

গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার আব্দুর রশিদ বলেন রাতের বেলায় প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাগার বন্ধ থাকলেও দ্বিতীয় শ্রেণির বিশ্রামাগারটি খোলা থাকে। কিন্ত যাত্রীরা বিশ্রামাগার ব্যবহার করতে গিয়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নোংরা করেন। আর সেবার মান বাড়াতে যাত্রীদের অন্যান্য সমস্যাগুলো আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

আমারসংবাদ/এমআর