Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

চিকিৎসকের সঙ্গে অশালীন অবস্থায় স্বামীর হাতে ধরা পড়েন সাবরিনা!

আমার সংবাদ ডেস্ক

জুলাই ১২, ২০২০, ১১:০৮ এএম


চিকিৎসকের সঙ্গে অশালীন অবস্থায় স্বামীর হাতে ধরা পড়েন সাবরিনা!

 

করোনা পরীক্ষার মনগড়া রিপোর্ট দেয়া নিয়ে আলোচনায় আসেন জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। রোববার (১২ জুলাই) তেজগাঁও ডিসির কার্যালয়ে জিঞ্জাসাবাদের পর প্রেপ্তার করা হয় তাকে।

করোনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফ চৌধুরীর প্রতারণার নেপথ্যে ছিলেন তার স্ত্রী ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। তাদের এক ল্যাপটপেই পাওয়া গেছে ১৫ হাজারেরও বেশি করোনার ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট। এরই মধ্যে করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ডা. সাবরিনার স্বামী আরিফসহ ছয়জন।

এদিকে ডা. সাবরিনার বিষয়ে তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে চাকরিতে থেকেই জেকেজির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন তিনি। কীভাবে, কার মাধ্যমে তিনি এ কাজ হাতিয়েছেন, সে ব্যাপারে চলছে অনুসন্ধান। জেকেজির প্রতারণা থেকে ডা. সাবরিনার কোনোভাবেই দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। কারণ তার স্বামী আরিফ চৌধুরী জিজ্ঞাসাবাদে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সাবরিনার সক্রিয় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে কোনো পরীক্ষা না করেই প্রতিষ্ঠানটি ১৫ হাজার ৪৬০ জনকে করোনার টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করেছে। একটি ল্যাপটপ থেকে গুলশানে তাদের অফিসের ১৫ তলার ফ্লোর থেকে এই মনগড়া করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করে হাজার হাজার মানুষের মেইলে পাঠায় তারা। টেস্টের জন্য জনপ্রতি নেওয়া হয় সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা। বিদেশি নাগরিকদের কাছে জনপ্রতি একশ' ডলার। এ হিসাবে করোনার টেস্ট বাণিজ্য করে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে সাত কোটি ৭০ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের রেজিস্টার। তার স্বামীর নাম আরিফ চৌধুরী। এই দম্পতির জীবনও রূপকথার মতো। আরিফের চতুর্থ স্ত্রী সাবরিনা। আরিফের এক স্ত্রী থাকেন রাশিয়ায়, অন্য একজন লন্ডনে। আর আরেকজনের সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। তবে ছাড়াছাড়ির পরও সাবেক ওই স্ত্রী বিভিন্ন জায়গায় আরিফের জন্য দেনদরবার করে যাচ্ছেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত সাবরিনার হাত ধরেই করোনার স্যাম্পল কালেকশনের কাজটি ভাগিয়ে নেয় অনেকটা অখ্যাত জেকেজি নামে এই প্রতিষ্ঠান। প্রথমে তিতুমীর কলেজে মাঠে স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপনের অনুমতি মিললেও প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার অন্য এলাকা আর অনেক জেলা থেকেও নমুনা সংগ্রহ করছিলেন তারা। স্বামী-স্ত্রী মিলে করোনা টেস্ট করলেও তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের নয়। স্ত্রীর সঙ্গে অশালীন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের এক চিকিৎসককে মারধর করেন আরিফ চৌধুরী। পরে এ ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় জিডি করেন ডা. সাবরিনা। এ ছাড়া জেকেজির এক কর্মীকে অশালীন প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় গুলশান থানার আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। বিএমএর নেতার পরিচয় ভাঙিয়ে চলাফেরা করেন সাবরিনা।

গত ২৪ জুন জেকেজির গুলশান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে আরিফসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। দু'জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জেকেজির কার্যালয় থেকে ল্যাপটপসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়। সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তি ছিল জেকেজির। পরে ওই চুক্তি বাতিল করা হয়। আরিফসহ ৬ জন ধরা পড়লেও এতদিন আটক হননি ডা সাবরিনা চৌধুরী। আজ গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে।

আমারসংবাদ/জেআই