Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

কলারোয়ায় পানিফল চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষক

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

নভেম্বর ২৩, ২০২০, ০৮:৩৫ এএম


কলারোয়ায় পানিফল চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষক

বিগত কয়েক বছর ধরে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে পানি ফল। লতার মত গাছটির শেকড় নিচে থাকলেও পানির ওপরে ভেসে থাকে পাতাগুলো, অনেকটা কচুড়িপানার মতো। 

আর ফলগুলোতে দুইটি শিং-এর মত কাঁটা থাকে, তাই আকৃতিগত কারণে স্থানীয়ভাবে এটি পানি সিংড়া নামেও পরিচিত। ফলগুলো দেখতে লাল ও সবুজ। খোসা ছাড়ালে বেরিয়ে আসে এর সাদা অংশটি, যেটি বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু। 

কলারোয়া পৌরসদরের গোপিনাথপুর এলাকায় যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের দু’ধারে দেখা মেলে বিস্তৃত পানি ফলের ক্ষেত। বর্তমানে উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায়ও যাচ্ছে কলারোয়ায় উৎপাদিত পানিফল। চলতি মৌসুমে অধিক ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে চাষীদের মুখে।

পানিফল চাষী আব্দুল আজিজ গাজী জানান, বিগত ২০০৮ সালে আজিবর নামে এক কৃষক পার্শ্ববর্তী কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে বীজ এনে অপ্রচলিত এই ফলের চাষ শুরু করেন। 

সেই থেকে গত ১২ বছর ধরে কলারোয়ার পতিত ও জলাবদ্ধ জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পানি ফল চাষ শুরু হয়েছে। কম খরচে অধিক লাভ ও পতিত জমি ব্যবহারের সুযোগ থাকায় কলারোয়া উপজেলায় ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এর চাষাবাদ। 

বর্তমানে উপজেলার গোপিনাথপুর, তেলকাড়া, গোয়ালচাতর, কুশোডাঙ্গা, মুরারীকাটি ও কেঁড়াগাছি সহ বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে পানিফল। বাংলা ভাদ্র থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত চাষীরা পানিফলের আবাদ করেন। আর বেচাকেনা চলে বাংলা কার্তিক, অগ্রহায়ণ থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত। 

প্রতি বিঘা জমিতে পানিফল আবাদে ১২-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়, আর ফল বিক্রি হয় প্রায় ৩৫-৪০ হাজার টাকার। প্রতি কেজি পানিফল ২০-২৫ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি হয়। এর চাষাবাদ বেশ লাভজনক।

এ ব্যাপারে কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৩৭ হেক্টর জমিতে পুষ্টিকর ও সুস্বাদু পানি ফলের চাষ হয়েছে। মৌসুমী ফল হলেও পানিফলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। 

এতে অনেক পতিত অগভীর জলাবদ্ধ জমির ব্যবহার যেমন নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি কর্মসংস্থানও হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে পানিফল চাষে। অল্প খরচে অধিক ফলন হওয়ায় লাভবান হচ্ছে চাষীরা। দেশের অন্যান্য জেলায় পানিফলের চাষাবাদ হয় না। 

তাই অন্য এলাকার মানুষ এই ফলটাকে তেমন একটা চেনেনা। এখন কলারোয়া থেকে এই ফল যশোর, ঢাকা, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, বগুড়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হচ্ছে। 

আমারসংবাদ/এআই