Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

যদি শান্তি নাই ফিরে আসে আত্মসমর্পনের দরকার কি?

ফুয়াদ মোহাম্মদ সবুজ, মহেশখালী

নভেম্বর ২৫, ২০২০, ০৯:৪০ এএম


যদি শান্তি নাই ফিরে আসে আত্মসমর্পনের দরকার কি?

দীর্ঘ এক বছর পূর্ণ হল মহেশখালীতে আত্মসমর্পনকৃত দস্যুদের। অভিযোগ উঠেছে, যারা আত্মসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে তাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল নিজ এলাকায় অবস্থান করে পূর্ণবাসন করতে সহযোগিতা করা হবে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। 

অপরদিকে, এক বছর পূর্ণ হলেও আত্মসমর্পনকৃত পরিবারের সদস্যসহ কারাগার থেকে জামিনে আসা দস্যুদের অনেকে নিজ ঘরে ফিরতে না পেরে মানবতার জীবনযাপন করছেন। এতে মাথা ব্যথা নাই কারও। আজকাল নিজ ঘরে ফিরতে পারবে বলে তাদেরকে মধ্যস্থকারীর পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে কালক্ষেপণ করছেন বলে জানান অনেকে।

২০১৮ সালের ২০ই অক্টোবর আত্মসমর্পণ করে আলোর পথে ফেরা জিয়া রহমানের বড় ভাই মিজানুর রহমান তার ব্যক্তিগত ফেসবুক টাইমলাইনে এক আবেকঘন স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন,  প্রিয় জিয়া মাতব্বরের কারা বরণ গেলো সোমবার এক বছর পূর্ণ হল। শান্তির বার্তা পোঁছে যাক প্রিয় কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ার প্রতিটি ঘরে ঘরে। 

শান্তি ও সহাবস্থান সৃষ্টির লক্ষে হাজার হাজার নারী পুরুষের দোয়া ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় আইজিপি মহোদয় ও আলোচিত সাংবাদিক এম,এম আকরাম হোসাইনের সমন্বয়ের উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করেন মাতাব্বর পরিবারের অনেকে।

কিন্তু আজও নিজ এলাকায় সহাবস্থান ও শান্তি দুরের কথা এলাকায় যাতায়তও করতে পারি না বা আজও শান্তি ফিরে আসেনি তাহলে কি আত্মাসমর্পনকৃত পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিল? আত্মসমর্পনের আজ এক বছর হয়ে গেল অথচ নিজ মাতৃভূমিতে ফিরতে পারিনি প্রতিশ্রুতি বদ্ধকারী ও সেই দিনের আয়োজকদের ব্যর্থতার কারণে।

ব্যর্থতা এই জন্য বলছি, আত্মসমর্পনের এক বছরও কিছু করতে পারে নাই, ঐ দিনই সফলতার স্বীকৃতি দিব যেই দিন সহাবস্থান সৃষ্টি হবে না হয় ভেবে নিব সব কিছু মরিচিকার পিছনে ছুটছি অচেনা পথ ধরে এর পরও হাজারও আশায় বুক বাঁধি কখন জন্মভূমিতে ফিরবো। 

এই এলাকার বর্তমান সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান তারা সম্পর্কে জেঠা ভাতিজা দুইজনেই যদি সহনশীল হয় এলাকায় সহাবস্থান ও শান্তি ফিরে আসা কোনো ব্যাপার নয়। আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি আমরা এখনও সম্পূর্ণ সহনশীল এবং শান্তিপূর্ণ এবং এর একটাই লক্ষ উদ্দেশ্য সেটা হলো শুধু প্রিয় মাতৃভূমিতে ফেরা এবং শান্তি। 

কিন্তু সহাবস্থানে ফেরার যে প্রত্যয় নিয়ে এই আত্মাসমর্পণ, যদি শান্তি নাই ফিরে আসে তাহলে এই আত্মসমর্পণের আর দরকার কি?

প্রসঙ্গত, গেলো ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর কক্সবাজারের মহেশখালীতে প্রথম আলোচিত সাংবাদিক আকরাম হোসেনের মধ্যস্ততায় র‍্যাব-৭ এর সহায়তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও র‌্যাবের ডিজির উপস্থিতিতে মহেশখালীর আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ৫টি বাহিনীর ৩৭ জনসহ ৪৩ জলদস্যু অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পন করেছিল। 

এর ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় দফায় ২০১৯ সালে ২২ নভেম্বর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশায় একযোগে মহেশখালীর কালারমারছড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিপির উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করেন ১২টি সন্ত্রাসী বাহিনীর ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগর। 

এসময় তাঁরা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৫৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২৮৪ রাউন্ড গুলি, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ বিভিন্ন যন্ত্র জমা দেন। তাঁরা সবাই জেলার মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়ার জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগর।

আমারসংবাদ/এআই