নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ৩, ২০২০, ০৬:০০ এএম
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিলম্বিত মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা মার্চ মাসে নেয়ার পরিকল্পনা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ।
এছাড়া সব ঠিক থাকলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত করে তারা হয়ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে পারে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর বুধবার (২ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমকে বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মার্চ মাসের শুরুতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। কীভাবে পরীক্ষা নেয়া হবে তা করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
অন্যবছর ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। সেই ফলাফল প্রকাশের পর মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সাধারণত অক্টোবরের মধ্যেই ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশ করা হয়। ১০ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন শেষে পাঠদান শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা হয়নি।
বছরের শেষভাগে এসে জানানো হয়, মহামারীর মধ্যে এ বছর আর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এইচএসসি ও সমমানের ১৪ লাখ পরীক্ষার্থীর মূল্যায়ন করা হবে জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে।
স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি শুরুর জন্য ডিসেম্বরের মধ্যেই এইচএসসির ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে গণমাধ্যমকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এর আগে জানিয়েছিলেন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, এইচএসসির মূল্যায়ন ফলাফল হাতে পেলে তারা মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে তার আগেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া শুরু হয়েছে। আমরা ফলাফলের অপেক্ষা করছি। হয়তো তাড়াতাড়িই ফলাফল দিয়ে দিবে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ ব্যাপারে অফিসিয়ালি সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে।
গত বছর সারাদেশে ১৯টি কেন্দ্রের আওতায় ৩২টি ভেন্যুতে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। মহামারীর কারণে শিক্ষার্থীদের দূরত্ব রেখে বসাতে গেলে চলতি বছর ভেন্যু বাড়াতে হবে।
এদিকে, চলতি বছরে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। গেলো ২ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিবের স্বাক্ষরিত এ নীতিমালা প্রকাশিত হয়।
১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি মিলে জিপিএ কমপক্ষে ৯ পয়েন্ট এবং আদিবাসী ও পার্বত্য জেলার প্রার্থীদের ক্ষেত্রে জিপিএ কমপক্ষে ৮ পয়েন্ট হতে হবে।
লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তর প্রদানের জন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা হবে। লিখিত পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম পেলে অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচিত হবেন শিক্ষার্থী।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমঅ্যান্ডডিসি) প্রণীত এই নীতিমালা দেশের সব সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল, ডেন্টাল কলেজ ও ডেন্টাল ইউনিট ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমবিবিএস-বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ৭২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। চলতি বছর দেশের ৩৬টি সরকারি ও ৭০টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ১০ হাজার ৬৯০ জন শিক্ষার্থী এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেতে পারেন।
আর সরকারি-বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ এবং মেডিকেল কলেজ সংযুক্ত ডেন্টাল ইউনিট মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৯৩৭ জন শিক্ষার্থী বিডিএস কোর্সে ভর্তি হতে পারেন।
আমারসংবাদ/এআই