Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

বাবুনগরী, ফয়জুল ও মামুনুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ৭, ২০২০, ০৬:৩৫ এএম


বাবুনগরী, ফয়জুল ও মামুনুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন

ভাস্কর্যের বিরোধিতার নামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আমীর মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী, সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক এবং ইসলামী আন্দোলনের নেতা সৈয়দ ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আবেদন করা হয়েছে। 

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সোমবার (৭ ডিসেম্বর) দু’টি মামলার আবেদন করা হয়।

মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং সৈয়দ ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

অন্যদিকে শুধু মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে বক্তব্য দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদার বাদীর জবানবন্দি নেওয়ার পর মামলা দু’টি আদেশের জন্য রেখেছেন।

[media type="image" fid="100239" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের মামলার আর্জিতে দণ্ডবিধির ১২০ (খ) (১)/১২৪ (ক)/ ৫০৫ (ক) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, ইসলামকে ‘ঢাল হিসেবে ব্যবহার’ করে আসামিরা ধর্মের ‘আজগুবি’ ব্যাখ্যা দিয়ে ‘বিদ্বেষপূর্ণ, কাল্পনিক, উত্তেজনাকর ও উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিচ্ছেন। তারা বাঙালি মুসলমান সমাজের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও সংবিধান সম্পর্কে ‘বিদ্বেষ সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন।

অ্যাডভোকেট মশিউর মালেকের মামলার আর্জিতে দণ্ডবিধির ১২০ (খ)/১৫৩/১২৪ (ক)/ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, মামুনুল হক এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ‘ভেঙে ফেলার হুমকি দেন’, যা দেশ ও সরকারের স্থিতিশীলতাকে ‘হুমকির মুখে’ ফেলে দিয়েছে।

আরো পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর সব ম্যুরালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ধূপখোলার মাঠে ‘তৌহিদী জনতা ঐক্যপরিষদের’ ব্যানারে এক সমাবেশ থেকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হয়।

একই দিনে রাজধানীর বিএমএ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে শানে রিসালাত কনফারেন্সে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করেন।

এরপর গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক মাহফিলে অংশ নিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমীর জুনাইদ বাবুনগরী হুমকি দেন, যে কোনো দল ভাস্কর্য বসালে তা ‘টেনে হিঁচড়ে ফেলে দেওয়া’ হবে।

তাদের এ ধরনের বক্তব্যের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যেই শুক্রবার গভীর রাতে কুষ্টিয়া শহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের ভাঙচুর চালানো হয়।

এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মো. জিশান মাহমুদ রোববার জুনাইদ বাবুনগরী ও মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আরেকটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।

এর আগে গত শনিবার (৫ ডিসেম্বর) মঞ্চের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে মামলা দায়েরের কথা জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি, ভাস্কর্যের বিরোধিতার নামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটাক্ষ ও অবমাননা করে মামুনুল গংরা প্রকাশ্যে বড় গলায় কথা বলছেন। মৌলবাদী অপশক্তিরা ধর্মের দোহাই দিয়ে ভাস্কর্য নিষিদ্ধ বলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এরা ভাস্কর্য ও মূর্তির পার্থক্যের অপব্যাখ্যা দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ না নিলে আমরা দেশ ও জাতির বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করছি। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

আমারসংবাদ/জেআই