সিলেট ব্যুরো
ডিসেম্বর ২৩, ২০২০, ০১:৩০ পিএম
পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেয়ার দাবিতে সিলেটের তিন জেলায় ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দ্বিতীয় দিনেও সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ধর্মঘটের কারণে বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রাস্তায় গণপরিবহন না থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে অফিসগামীদের। অনেকে আবার রিকশা কিংবা মোটরসাইকেলে করে যাওয়াআসা করেছেন। এতে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
যাত্রীরা বলছেন, ধর্মঘটকে পুঁজি করে রিকশাচালক উবার-পঠাও চালকেরা বেশি ভাড়া হাঁকছেন। এছাড়া ধর্মঘটের কারণে সিলেটে আটকা পড়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা।
সিলেটের বন্ধ থাকা সব পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সমর্থনে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে শ্রমিকেরা এই ধর্মঘট পালন করছেন। ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও সিলেট নগরীর প্রতিটি মোড়ে পরিবহন শ্রমিকদের লাঠি হাতে রাস্তায় অবস্থান করতে দেখা গেছে। এছাড়া রাস্তায় বেশ কয়েকটি প্রাইভেট গাড়ি প্রতিহত করে পিকেটিং করেন শ্রমিকরা।
এদিকে টানা তিনদিনের পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে রাস্তায় গণপরিবহন না থাকায় সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে বেশি ভাড়া নিচ্ছে মোটরসাইকেল চালকরা। রাইড শেয়ারিংয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করা মোটরসাইকেল অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন যাত্রীদের কাছে। নগরীর সকল পয়েন্টে লোকাল বাসের মতো ডেকে মোটর সাইকেলে যাত্রী উঠানো হচ্ছে। মৌখিক চুক্তিতে যাত্রীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুরো সিলেট বিভাগে এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানালেও সুনামগঞ্জ জেলায় এটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে বিভাগের সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। সংগঠনটি আজ ও আগামীকাল ধর্মঘট পালন করবে।
এদিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গ্রিল সংযোজনে পুলিশের নির্দেশনা প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবিতে সিলেট জেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক ও মালিকদের সংগঠন সোমবার ও মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন করেছে। মঙ্গলবার রাতে অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের এক বৈঠকে কর্মবিরতি আরও এক দিন বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সিলেট জেলা ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু সরকার বলেন, আমাদের ধর্মঘটে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া দেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসক উনার কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। তাই আমাদের নির্ধারিত আন্দোলন চলবে।
উল্লেখ্য, পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভছড়া- এই পাঁচ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
এর আগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বেলা)-এর দায়ের করা একটি রিটের প্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে সবধরনের যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত। সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আন্দোলন করে আসছেন পাথর ব্যবসায়ীরা। এবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন পরিবহণ ব্যবসায়ীরা।
আমারসংবাদ/এআই