Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

‘বাংলাদেশকে নির্দেশনা না দিয়ে রাখাইনে পরিবেশ তৈরি করুন’

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ৮, ২০২১, ০৩:০৫ পিএম


‘বাংলাদেশকে নির্দেশনা না দিয়ে রাখাইনে পরিবেশ তৈরি করুন’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশকে নির্দেশনা না দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মিয়ানমারের রাখাইনে গিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরার পরিবেশ তৈরি করা উচিত।

সোমবার (৮ মার্চ) ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। রাজধানীতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা নারীদের স্বার্থে হলেও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো এবং ঢাকায় সুইজারল্যান্ড, সুইডেন ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূতেরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কার্যযকর পদক্ষেপ না নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়ানোর কথা তুলে ধরে তাদের সমালোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আব্দুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জড়িত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উচিত (রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কাজে) এগিয়ে আসা। আমাদেরকে নির্দেশনা না দিয়ে তাদের উচিত রাখাইন রাজ্যে যাওয়া এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা। তাদের উচিত মিয়ানমারের সঙ্গে বেশি করে যুক্ত হওয়া।

মোমেন বলেন, ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও কন্যাশিশু। এখন আমাদের এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কর্তব্য তাদের জন্য কিছু করা, তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা। এটা লিপ সার্ভিসের সময় নয়। রোহিঙ্গাদের কথা বলে দূরে থাকতে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারি না আমরা। এটা স্বাভাবিক কার্যক্রমের সময় নয়।

মিয়ানমারের কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকে অবরোধের আওতায় আনলেও ব্যবসায়িক সম্পর্ক চালিয়ে নেওয়ার সমালোচনা করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা যথেষ্ট নয়। কেন তারা এক বা দুইজন জেনারেলকে তাদের দেশে যাওয়া বন্ধ করছে এবং অন্যান্য ব্যবসায় স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে নিচ্ছে? গত চার বছরে গণহত্যার পরও মিয়ানমারে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সাড়ে ৩ থেকে ১৫ গুণ বেড়েছে- এটা সত্যিকার অর্থে হতাশাজনক। পনের গুণ! আপনি বিশ্বাস করতে পারেন! যে দেশ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে ও জাতিগত নিধন করেছে, তাদেরকে কি আপনারা ব্যবসা-বাণিজ্যের দিয়ে সহযোগিতা করতে পারেন? এরপরও আপনি কি মানবাধিকারের কথা বলতে পারেন?

রোহিঙ্গাদের একাংশকে ভাসানচরে স্থানান্তর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, তারা কি কুতুপালংয়ে আছে নাকি ভাসানচরে আছে, সেটা অগুরুত্বপূর্ণ ও অপ্রাসঙ্গিক। প্রাসঙ্গিক হলো তারা তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত যাবে এবং সম্মানজনক জীবিকা ও ভবিষ্যৎ পাবে। যে সংস্থা মানবতার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে, কিন্তু এই হতভাগ্য মানুষদের প্রত্যাবাসনের জন্য কিছু করছে না, তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।

রোহিঙ্গারা অবস্থান এভাবে দীর্ঘ হতে থাকলে তারা এক সময় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কার কথা জানান মোমেন।

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘কূটনীতিতে নারী: কেমন করছি আমরা?’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সদস্য ইসরাত জাহান উর্মি।

ডিক্যাব সভাপতি পান্থ রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো, সুইডিশ রাষ্ট্রদূত অ্যালেসান্দ্রা বের্গ ফন লিনডে এবং সুইস রাষ্ট্রদূত নাতালি শিয়ার, মালদ্বীপের হাই কমিশনার শিরুজিমাথ সামির, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মাসুদ মাহমুদ খন্দকার, সামিয়া হালিম ও ফারহানা রহমান চৌধুরী, ডিক্যাবের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দিন বক্তব্য দেন।

কূটনৈতিক অর্জনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামসকে অনুষ্ঠানে সম্মাননা দেয় ডিক্যাব।

আমারসংবাদ/জেআই