Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

দুই ‘কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ’র পর মিলছে মামুনুলের চতুর্থ বিয়ের তথ্য!

এপ্রিল ২৩, ২০২১, ০৯:৫৫ এএম


দুই ‘কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ’র পর মিলছে মামুনুলের চতুর্থ বিয়ের তথ্য!

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিয়ে নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না। রিসোর্টকাণ্ডের পর দ্বিতীয় বিয়ে বা মানবিক বিয়ের রেশ না কাটতেই আলোচনায় আসে তার কথিত তৃতীয় বিয়ের। এবার ঘটনাপ্রবাহে মামুনুলের চতুর্থ বিয়ের বিষয়েও মিলছে তথ্য।

সারাদেশে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে তাকে সাতদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ বলেন, সাধারণ মানুষকে উস্কানি দেওয়া, সরকার পতনের উদ্দেশ্য, মন্ত্রীদের কটুক্তি করার বিষয়গুলো নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। এছাড়া মামুনুলকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ বা দেশের বাইরে থেকে কেউ পৃষ্ঠপোষকতা করছে কি-না সবকিছুই আমাদের তদন্তে আসবে।

রিমান্ডে বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনার পাশাপাশি মামুনুলকে ব্যক্তিগত-পারিবারিক বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি পুলিশের কাছে বাকি দুই বিয়ের কথা স্বীকার করলেও এ সংশ্লিষ্ট কোনো বৈধ কাজপত্রের বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। বার বারই 'শরিয়াহ মোতাবেক' বিয়ে হয়েছে দাবি করে কাবিননামা বা রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে প্রথম স্ত্রী ছাড়াও আলোচিত বাকি দুই নারীর বিষয়ে জানতে চাইলে মামুনুল দাবি করেন, স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে শরিয়াহ মোতাবেক দুইজনকেই তিনি বিয়ে করেছেন। শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ের নামে আদতে স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে ওই দুই নারীর সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন মামুনুল। ইতোমধ্যে ওই চুক্তির কপিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

চুক্তিতে বলা হয়েছে, মামুনুল হক তাদের বিয়ে করবেন না, স্ত্রীর মর্যাদাও দেবেন না। তবে তাদের ভরণপোষণ দেবেন। এই শর্তে স্ত্রীর মতো করে ওই নারীদের সঙ্গে মিশবেন তিনি।

এ বিষয়ে মামুনুল পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেন, স্ত্রীর মর্যাদা না দিলেও তাদের ভরণপোষণ দিচ্ছেন, তার বিনিময়ে তারা তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন। এটা ইসলামের বিধিবিধানের মধ্যেই তিনি করেছেন এবং এটা শরীয়ত সম্মত।

পুলিশ সূত্র জানায়, মামুনুলের রিসোর্টকাণ্ডের মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসায় হেফাজতের নেতৃত্ব পর্যায়ের সদস্যদের উপস্থিতিতে একটি গোপন বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে মামুনুল তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে নিজের ভুল স্বীকার করেন। এ সময় রিসোর্টের ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে স্বীকার করলেও পরিবারের কাছে গোপন রাখার বিষয়টি জানান।

মামুনুল খুব দ্রুতই যেকোনো পরিস্থিতি ম্যানেজ করতে পারতেন। তিনি বৈঠকে উপস্থিত সকলের কাছে দাবি করেন, কোনো রেজিস্ট্রেশন না করলেও বিয়েটি তিনি শরিয়াহ মোতাবেক করেছেন। এরপর তিনি ওই বৈঠকে বিয়ের দুইজন স্বাক্ষীকে হাজির করে কথা বলিয়ে দেন। তাৎক্ষণিক এই বক্তব্য এবং যুক্তিতে হেফাজত নেতারা সন্তুষ্ট হয়ে মামুনুলকে যেকোন অবস্থায় পরিপূর্ণ সাপোর্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই মামুনুল হকের বিষয়ে ছায়াতদন্ত চলছিলো। তদন্তে মামুনুলের চতুর্থ বিয়ের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া, মাদরাসায় শিক্ষকতা করার সময় মামুনুলের বিরুদ্ধে বলৎকারের অভিযোগের বিষয়েও তদন্ত করা হচ্ছে।

এছাড়া, ওয়াজ মাহফিলে এবং বিভিন্নসময় বিভ্রান্তিকর বার্তা দিয়ে কওমি মাদরাসার কোমলতি শিশুদের আক্রমণাত্মক করার দায় প্রসঙ্গে মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মামুনুল হক বলেন, যেহেতু আমি নেতা, তাই আমি দায় এড়াতে পারি না।

আমারসংবাদ/জেআই