Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

এলএসডির পর এবার ভয়ংকর মাদক ‘ডিএমটি’ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ২৭, ২০২১, ১০:৫৫ এএম


এলএসডির পর এবার ভয়ংকর মাদক ‘ডিএমটি’ উদ্ধার

সম্প্রতি আত্মঘাতী মাদক হিসেবে চিহ্নিত নতুন মাদক ‘এসএসডি’ ধরা পড়েছিলো রাজধানী ঢাকায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলেছিলো, দেশে এটি নতুন মাদক। নতুন মাদক হিসেবে এলএসডি ধরা পড়ার মাস না পেরোতেই এবার ধরা পড়লো আরও একটি নতুন মাদক ‘ডিএমটি’। 

দীর্ঘ গোয়েন্দা নজরদারি ও তদন্তের ভিত্তিতে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা থেকে নিষিদ্ধ মাদক এলএসডি ও ডিএমটিসহ চার মাদক কারবারিকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-২)।

রোববার (২৭ জুন) দুপুরে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-২ এর অধিনায়ক খন্দকার সাইফুল আলম এই তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, গত রাতের অভিযানে উদ্ধারকৃত নতুন ধরনের একটি মাদক যার নাম ডিএমটি, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম Dimethyl Tryptamine এটি একটি হ্যালুসিনোজেনিক ট্রিপটামাইন ড্রাগ। মূলত এটি মুখে এলএসডি সেবনের মতো, যা ধোঁয়ার মাধ্যমে শ্বাস নিয়ে বা ইনজেকশনের সাথে নেওয়া যায়। এটি সেবনের পরে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট গভীর আসক্তি তৈরি করে। গ্রেফতারকৃতদের ভাষ্যমতে এটি সেবনের পর তড়িৎ হ্যালুসিনেশন হয় এবং তারা কল্পনার জগতে প্রবেশ করে। মূলত এটা থেকে মারাত্মক দুর্ঘটনা হতে পারে এমনকি জীবননাশও হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, গতকাল ২৬ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব সদর দফতর গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-২ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন লাভ রোড এলাকা থেকে সৈয়দ মঈন উদ্দিন আহমেদ শাদাব (২৯), মো. আব্রাহাম জোনায়েদ তাহের (২৫), স্বপ্নীল হোসেন (২২) ও সিমিয়ন খন্দকার (২৩) নামে চার যুবককে আটক করে। এসময় তাদেরকে তল্লাশী করলে তাদের কাছ থেকে বর্তমান সময়ের আলোচিত মাদক এলএসডি- ৪০ ব্লট, নতুন মাদক ডিএমটি ৬০০ মিলিগ্রাম, আমেরিকান ক্যানাবিজ ৬২ গ্রাম এবং মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, গ্রেফতার সৈয়দ মঈন উদ্দিন আহমেদহ শাদাব রাজধানীর উত্তরায় স্থানীয় এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল হতে ‘এ’ লেভেল শেষ করার পর ভারতের দার্জিলিং এ ২০১৩ সালে ‘ও’ লেভেল পড়াশোনা করে। এরপর সে ২০১৫ সালে বিবিএ পড়ার জন্য থাইল্যান্ডে যায়।

‘এরপর এক বছর সে থাইল্যান্ডে বিবিএ পড়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সঙ্গে এলএসডি ও ডিএমটি মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে বাংলাদেশে এসেও ওই মাদক গ্রহণ ও সংগ্রহ অব্যাহত রাখে। শাদাব মূলত এই ড্রাগ বিদেশ থেকে বিভিন্ন পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে নিয়ে আসে এবং বাংলাদেশে নিজে গ্রহণ ও বিক্রি করে।’

তিনি আরও বলেন, অপরদিকে আব্রাহাম জোনায়েদ তাহের রাজধানীর এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে ‘এ’ লেভেল শেষ করে মালেয়েশিয়া গমন করে। ২০১৫-১৬ সাল পর্যন্ত পড়ালেখার জন্য অবস্থান করে। পরবর্তীতে সে উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে গমন করে। সেখানে সে নিয়মিত এলএসডি ও ডিএমটি গ্রহণ করতো। সেখান থেকে এমবিএ শেষ করে ২০২০ সালে বাংলাদেশে ফেরত আসে এবং বাংলাদেশে নিয়মিত এলএসডি ও ডিএমটি গ্রহণ ও বিক্রি করে। এ ছাড়া গ্রেফতার স্বপ্নীল হোসেন এবং সিমিয়ন খন্দকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত রয়েছে।

র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক আরও বলেন, গ্রেফতাকৃতররা নিজেরাই মাদক সেবন করে, বিক্রি করে এবং নতুন নতুন মাদক গ্রহীতা তৈরি করে, যা সমাজের জন্য খুবই আশঙ্কাজনক। এসব মাদকের উৎস এবং এর সরবরাহকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আমারসংবাদ/জেআই