Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

এবারও স্বজন ছাড়াই ৫২ সহযোদ্ধার ঈদ: রাশেদ খান

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ২১, ২০২১, ০৫:৫০ এএম


এবারও স্বজন ছাড়াই ৫২ সহযোদ্ধার ঈদ: রাশেদ খান

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেছেন, বাংলাদেশ ছাত্র যুব শ্রমিক অধিকার পরিষদের ৫২ জন সহযোদ্ধা এখনও কারাবন্দি রয়েছে। গত ঈদটাও তারা তাদের পরিবারের সাথে পালন করতে পারেনি। এবার ঈদুল আজহার এই ঈদটাও তারা তাদের পরিবারের সাথে পালন করতে পারছে না। 

মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা জানান। 

রাশেদ খান বলেন, আমাদের সহযোদ্ধাদের জেলে রেখে ঈদ পালন করা আমাদের জন্য অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং অত্যন্ত কষ্টের। আমরা আমাদের জায়গা থেকে আমাদের সহযোদ্ধাদের মুক্ত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আপনারা দেখেছেন যে আমরা কয়েকদফা আন্দোলন করেছি। 

তিনি বলনে, জাফরউল্লাহ চৌধুরি স্যারসহ নাগরিক সমাজের কয়েকজন প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয়েছিলেন। নিম্ন আদালত থেকে আমাদের এই সহযোদ্ধাদের জামিন দেওয়া হয়নি। যে কারণে তাদের জামিন নেওয়ার জন্য উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়া লাগছে। আমাদের সহযোদ্ধারা যারা জেলে রয়েছেন তারা অধিকাংশ ছাত্র, তরুণ। 

তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম খুব কম লক্ষ্য করা যায়। যে ছাত্রদেরকে এভাবে মাসের পর মাস কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়। যারা কারাগারে বন্দী রয়েছে আমাদের এই সহযোদ্ধাদের একজনও কারো মাথায় পিস্তল ধরেনি, টেন্ডারবাজি করেনি, চাঁদাবাজি করেনি। তাদের নামে অতীত কোনো খারাপ রেকর্ড নেই। তারা দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাঁচার করে বিদেশে বেগম বিলাশ গড়ে তোলেনি। আমাদের এই সহযোদ্ধারা দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য সবসময় কাজ করে যাচ্ছেন। 

রাশেদ খান আরও বলেন, আগ্রাসন বিরোধী আন্দোলন করার কারণে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি কোনো অপরাধ হতে পারে না। সংবিধান যেখানে আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম করার স্বাধীনতা দিয়েছে সেখানে এভাবে ছাত্রদেরকে মাসের পর মাস কারাগারে বন্দী রাখা এটি খুবই দুঃখজনক। বাংলাদেশের যে ধরনের ব্যাড কালচার রয়েছে- কেউ অপরাধ করুক আর না করুক তার নামে মামলা হলে বা অভিযোগ আসলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অথচ তদন্ত করে দেখা হয় না তিনি আসলে প্রকৃতপক্ষে অপরাধী কি না। যে লােকটিকে জেলে বন্দী করে রাখা হলো তিনি যদি নিরপরাধ হয়ে থাকেন পরবর্তীতে যে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে রায় আসে যে তিনি নির্দোষ তাহলে তাকে যে এভাবে পাঁচ, ছয় মাস এক বছর বিনা বিচারে জেলে রাখলেন এর খেসারত কে দেবে? এই ধরনের আইন আমাদের পরিবর্তন করতে হবে। 

রাশেদ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অত্যন্ত খারাপ লাগে আসলে বলার ভাষা নাই। দুইটা ঈদ তারা তাদের পরিবারের সাথে পালন করতে পারবে না। এই সহযোদ্ধাদের পরিবার আমাদের সাথে যোগাযোগ করছে, কল দিচ্ছে, তাদের কষ্টের কথাগুলো আপনাদেরকে বলে বুঝাতে পারবো না। গত রাতে বিনি আমিন মোল্লার আব্বার সাথে অমার কথা হয়েছে। একমাত্র ছেলে আমাকে বার বার বিনি আমিন মোল্লার আব্বা কল দিচ্ছেন এবং বলছে বাবা একটু দেখ, এই ঈদটাও ছেলের সাথে আমি কাটাতে পারলাম না। আমরা বৃদ্ধ মানুষ, কবে মারা যাই বলা যায় না। ছেলেকে জেলে রেখে ঈদ পালন করা কি আমাদের পক্ষে সম্ভব? তিনি কথা বলতে গিয়ে বার বার আটকে গিয়েছেন। দূর থেকে আমি যেটি বুঝতে পেরেছি। তিনি হয়তো ওপাশ থেকে চোখ টলমল করে জল বেরিয়ে পড়েছে। পাশে হয়তো আমিনের আম্মা তিনি হাউমাউ করে কাঁদছেন। আমাদের সহযোদ্ধা যারা জেলে রয়েছেন তাদের প্রত্যেকের বাবা-মা এভাবেই কান্নাকাটি করছে। 

আমারসংবাদ/এমএস