Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

এ যেন আরেক শাহেদ করিম 

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ৩, ২০২১, ০১:২০ পিএম


এ যেন আরেক শাহেদ করিম 

মাদক সম্রাট নামটি আড়াল করতে বর্তমানে করোনা রোগীদের লাশ দাফন করাকে সে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। নিজেকে মাদকবিরোধী দাবি করলেও মূলত তার বিরুদ্ধেই রয়েছে মাদকের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ। তার আপন চাচাতো ভাই রুবেল সরকারকে দিয়ে সে চালাতো রমরমা তার মাদক ব্যবসা। বলছিলাম কুমিল্লার কুখ্যাত মাদক সম্রাট সরকার মো. লিটন (আবরার)’র কথা। এ যেন আরেক শাহেদ করিম। এলাকার অনেকেই তাকে আরেক ‘শাহেদ করিম’ নামেই ডাকে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লিটন নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হিসাবে পরিচয় দিলেও কোনো পদ-পদবীতে নেই। উল্টো তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাদের হেনস্থা এবং আওয়ামী লীগ অফিসে ভাংচুর, হামলা করার অভিযোগ রয়েছে। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ দেবিদ্বার ও চান্দিনার মানুষ। সে বাগুর ও চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড থেকে দৈনিক এক লাখ টাকা চাঁদা উত্তোলন করে। সন্ধ্যার পর বাগুরস্থ তার নিজস্ব কার্যালয়ে দৈনিক উত্তোলিত চাঁদার টাকা ভাগাভাগি করার পর মাদকের আসরে বসে।   

অভিযোগ সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতাদের উপর হামলা ও মারধর এবং ১৫নং বরকামতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাংচুর এবং চাঁদাবাজির ঘটনায় লিটন সরকারের বিরুদ্ধে একই উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মৃত ময়নাল হোসেন মাষ্টার এর ছেলে মো. মিজানুর রহমান ও বরকামতা গ্রামে মৃত হরিদাস পালের ছেলে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক, বীরমুক্তিযোদ্ধা-গোলাপ চন্দ্র পাল (৬০) এবং ব্রাক্ষনখাড়া গ্রামের মাহবুব আলমের স্ত্রী মানছুরা আক্তার (৩৬) কুমিল্লা সিনিয়র জুডিঃ ম্যাজিঃ এর ৪ নং আমলি আদালতে মামলা করেন। মামলা নং যথাক্রমে সি, আর  ৪৪/১৬ ও ২৩১/১৮ এবং ২২৮/১৮। 

এর আগে লিটন সরকারের বিরুদ্ধে ঢাকা রিপোর্টার ইউনিটিতে সংবাদ সন্মেলন করার কারনে প্রয়াত জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ এম হুমায়ুন মাহমুদকে লাঞ্ছিত করা ও গত ৪ জানুয়ারি ২০১৬সালে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় যাওয়া কালে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য লুৎফুর রহমান বাবুলের উপর হামলা করে, তাহার হাত ও পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যা পরে জাতীয় দৈনিক সহ স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় ও মামলা হয়। 

লিটন সরকার কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলাধীন বাগুর গ্রামের মৃত আবদুল মজিদ সরকারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে দেবিদ্বার উপজেলার নবিয়াবাদ গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে মীর্জা বাহাদুর (৪৬), আবু ছালাম ওরফে বাচন মিয়ার স্ত্রী আসমা বেগম (২৪) দেবিদ্বার থানায় চাঁদবাজীর মামলা করেন। মামলা নং যথাক্রমে জি,আর-৩৩৩/১৪ এবং ৩৫ তাং ২৭/৫/১৮। একই উপজেলার খাদঘর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম এর স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৩৫) মো. লিটন সরকার এর বিরুদ্ধে চান্দিনা থানায় ছিনতাই ও ডাকাতি ও মারাত্মক কাঁটা যখম এর মামলা করেন। মামলা নং- ০৬ তাং ১/৬/১৮।   

উল্লেখ্য যে, গত ৯ই জুন ২০১৯ সালে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবা ও অস্ত্র সহকারে জঅই এর অভিযানে ক্রসফায়ারে নিহত হন রুবেল সরকার ওরফে বোতল রুবেল। তার অপর চাচাতো ভাই  সাদ্দাম সরকার ২০১৭ সালে মাদক মামলায় পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়াও আরেক চাচাতো ভাই এমরান সরকার গত ১৯ জুলাই ২০২০সালে ইয়াবা ও ফেনসিডিলসহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হন ও পরে  তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। বার বার পুলিশের হাতে আটক হলেও স্থানীয় এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এর ছত্রছায়ায় বেঁচে যায় এই বাঘা লিটন। নিজেকে সমাজসেবক হিসাবে পরিচয় দিলেও আসলে সে এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দখলবাজ, চাঁদাবাজ ও মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত। ফেরারি এই ব্যক্তি নিজের অন্যায়কে ঢাকতে করোনাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার কারণে তাকে নিজ এলাকায় আরেক ‘শাহেদ’ নামেও ডাকেন অনেকে।

আমারসংবাদ/জেআই