Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলায় আবরারকে হত্যা করা হয়েছে: শহীদুল আলম

অক্টোবর ৭, ২০২১, ০২:৫৫ পিএম


আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলায় আবরারকে হত্যা করা হয়েছে: শহীদুল আলম

বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেছেন, নিপিড়ক কখনো নিপিড়ন করতে পারেনা যদি প্রতিবাদ থাকে। আমরা চুপ আছি বলেই তারা নিপিড়ন চালিয়ে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে নির্যাতন বিরোধী ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ ও দৃক গ্যালারীর ছবি প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, চুপ থাকতে বলা হয়েছিল কিন্তু আমি চুপ থাকিনি। আমাকে বলা হয়েছিল আমার কিছু হবেনা শুধু কথা বলা যাবেনা; আমি সেটি করিনি। তাই যারা চুপ থাকছেন তারা দেশের মানুষের সাথে অন্যায় করছেন। আপনাদেরকে নিপিড়কের সমর্থক হিসেবে জাতি মনে রাখবে।’

আবরার আগ্রাসনে বিরুদ্ধে এবং দেশের পক্ষে কথা বলেছেন বলে শহীদ হতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তথাকথিত বন্ধু রাষ্ট্র যাদের সাথে নাকি আমাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় আবরারকে পিটিয়ে পিটিয়ে মারা হয়েছে’। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো টর্চার সেল থাকতে পারেনা বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় তার হাতে আগ্রাসন বিরোধী ‘আট স্তম্ভ’ তুলে দেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর। 

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, রাশেদ খান, ফারুক হাসান, বিন ইয়ামিন মোল্লা প্রমূখ।

ড. আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, বাংলাদেশ এখন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে, এটি একটি গণযুদ্ধ। এ যুদ্ধে জয়লাভ করতে হলে ডান-বাম, জাতীয়তাবাদী, ইসলামী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে, আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, অতীতের মত ছাত্ররা এখন আর অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারছে না । যেকোন মূল্যে ছাত্রদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিতে হবে। রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের নিরবতায় সাধারণ ছাত্ররা এখন গণতন্ত্র ও দেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অধ্যাপক লতিফ মাসুম আরও বলেন, ২০১৪ সালে সরকার সংবিধান রক্ষার কথা বলে নির্বাচন করেছিল কিন্তু পরবর্তিতে কথা রাখেনি। ২০১৮ সালে সরকার প্রধান দেশকে-বিশ্বকে বলেছিল আমাকে বিশ্বাস করুন। সরকার প্রধান হিসেবে তিনি বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন এটি ভাবা যায় না।

সমাবেশে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন শহীদ আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে । আর কোন বাবা-মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়। আমি আবরারের খুনিদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানাই।’

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ‘মেধাবি ছাত্ররা অনেক কষ্ট করে বুয়েটের মত জায়গায় পড়তে এসেছে। ছাত্রলীগ তাদের খুনি বানিয়েছে এবং দেশের পক্ষে কথা বলায় আবরারকে খুন করেছে । ছাত্রলীগ এমন একটি মেশিন যেখানে ভাল ছাত্ররা প্রবেশ করে কিন্তু সন্ত্রাসী হয়ে বেড় হয়। তবে ছাত্রলীগের সবাই খারাপ তা বলছি না। আমিও এক সময় ছাত্রলীগ করেছি কারো সাথে খারাপ আচরণ করিনি। ডাকসুর ভিপি হিসেবে কোথাও চাঁদাবাজি করিনি।’

এ সময় অবিলম্বে সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।

আমারসংবাদ/আরএইচ