Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

এ যেন মাটির পুনর্জন্ম

নভেম্বর ২, ২০২১, ১১:০৫ এএম


এ যেন মাটির পুনর্জন্ম

মাটির উপর থরে থরে সাজানো মাটির কারুকার্য। আগুনে পুড়ে, রোদে পুড়ে, গায়ে রঙ মাখিয়ে এ যেন মাটির পুনর্জন্ম, এ যেন দেয়ালে সাটানো মাটির কার্পেট। বাহারী রঙের নকশায় দূর থেকেও ক্রেতাদের নিয়ে আসে মাটির কাছাকাছি। অন্দরে শৈল্পিক আঁচড় আনতে মৃৎশিল্পের রয়েছে বেশ বড় ভূমিকা। প্রাচীনকাল থেকেই মাটির তৈজসপত্র ব্যবহার হয়ে আসছে। মাটির তৈরি নিত্যপ্রয়োজনীয় আসবাব একসময় প্রচুর হতো। কালের বিবর্তনে মৃৎশিল্পের পাশাপাশি কাঁসা, লোহা, প্লাস্টিক ও কাঠ আধিপত্য বিস্তার করে।

বর্তমানে ঢাকার বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর বিপরীতে, কলাবাগানের ফুটপাতে, ঢাকা কলেজের সামনের ফুটপাতে, আসাদগেট, দেশীয় ফ্যাশন হাউসে রয়েছে মনকাড়া মাটির সামগ্রী। এর মধ্যে আড়ং, যাত্রা, ক্লে স্টেশন, সানরাইজ প্লাজার সিরমিক, মিরপুরের শিল্পচর্চা, মোহাম্মদপুরের আইডিয়া ক্র্যাফটস, শাহবাগ আজিজ মার্কেটে আইডিয়াস কর্নারসহ বেশ কিছু দোকান। এখানে দিনভর চলে কেনাকাটা। ক্রেতা আসেন বিভিন্নজায়গা থেকে। ক্রেতা আসতে পারছেন না তো কি হয়েছে আছে কুরিয়ারের ব্যবস্থা, আছে অনলাইনে পণ্যের অর্ডার দেয়ার সুয়োগ।

যা যা পাবেন এখানেঃ

সৌখিন এ মাটির তৈরি পণ্যের মধ্যে রয়েছে, প্লেট, কারি বাটি, রাইস-কারি, কাপ-পিরিচ, অ্যাশট্রে, ক্যান্ডেল হোল্ডার, মটকা, মদনপট, ডোরবেল, শোপিস, জগ, গ্লাস, কাজলরেখা, হোল্ডার, কুপি, ব্যাংক, শানকি, হোল্ডিং টপ, ক্লে-পট, কয়েল-স্টার, পঞ্চপ্রদীপ, নকশাওয়ালা টব, ফুলদানি, পুতুলসহ নানান ধরনের ঘর সাজানোর সরঞ্জাম।

দরদামঃ

মাটির মগ, গ্লাস এসবের দাম পড়বে ৩০-৫০ টাকা, জগ ১০০-১২০ টাকা, মাটির চমৎকার প্লেটগুলো পাবেন ৩০-৯০ টাকায়, পান্তা খাবার সানকিগুলো পাবেন ৫০ টাকার মধ্যেই। ছোট প্লেট-পিরিচের দাম পড়বে ২৫-৪০ টাকা, ঢাকনাসহ কারি ডিশ পাবেন ৫০-১২০ টাকায়। মাটির কাপ-পিরিচ প্রতিটির দাম পড়বে ২০-৪০ টাকা, বিভিন্ন সাইজের মাটির বাটিগুলো পাওয়া যাবে ৩০-১২০ টাকায়। মুখোশ ১২০-৮৫০ টাকা। বিভিন্ন নকশার শো-পিস ৬০-১০০০ টাকা, মাটির আয়না ১২০-৫০০ টাকা, ওয়াল টব ৯০-৩৫০, মাটির ঘড়ি ২৫০-৪৫০ টাকা, মাটির মোমদানি স্ট্যান্ড ৫০-৩৫০ টাকা। এগুলো ছাড়াও পাবেন ঘর সাজানোর জন্য মাটির অন্যান্য জিনিসপত্রও।

রাজধানী মিরপুর-২ এলাকার রাস্তার ধারের দোকান গুলোতে মাটির তৈরি তৈজসপত্র কিনতে আসার এক ক্রেতা আসমা আক্তার বলেন, মাটির তৈরি জিনিস দেখতেও ভালো লাগে। প্লাস্টিকের পণ্য দামে কম হলেও মাটির সাথে তুলনা হয় না। আমি প্রায় সময়ই এখান থেকে বিভিন্ন পছন্দের জিনিস কিনতে আসি। যেগুলো ব্যবহার করা যায় করি আর যেগুলো ঘরে সাজিয়ে রাখা যায় সাজিয়ে রাখি। মাটির জিনিস ব্যবহার করলে এখনো পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে।

আসাদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, একটা মাটির ব্যাংক কিনলাম মাত্র ৪০ টাকা দিয়ে। প্রতিদিন ইনকাম যা করি অল্প অল্প জমাই। দুই তিন মাস পরপর দেখি অনেক টাকা জমে গেছে ভালো লাগে। মাটির ব্যাংকে টাকা জমানোর মধ্যে একটা আনন্দ আছে। দামেও  কম। প্লাস্টিকের জিনিস ভালো লাগে না।

তৈজসপত্রের দোকানের এক বিক্রেতা আলমগীর রহমান বলেন, এখানে বিভিন্ন ধরনের মাটির জিনিসপত্র পাওয়া যায়। ক্রেতাদের পছন্দ মতো জিনিস কিনে নিয়ে যায়। যার যার পছন্দ মতো ডিজাইনের অর্ডার দিলেও আমরা অর্ডার দিয়ে বানাইয়া দেই। বাপ দাদার ও এই ব্যবসা ছিলো। এখন তো আর আগের মতো চলে না। তবে যারা মাটির জিনিস পছন্দ করে তারা সব সময়ই আসে এখানে।

আমার সংবাদ/রা.হা