Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

লকডাউনে হাজারো মানুষকে খাবার দিচ্ছে সৃষ্টির সেবা সংস্থা

মে ১১, ২০২১, ০১:২৫ পিএম


লকডাউনে হাজারো মানুষকে খাবার দিচ্ছে সৃষ্টির সেবা সংস্থা

করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে সরকার লকডাউন ঘোষণা করেছে একমাসেরও বেশি। লকডাউনের কারণে খাদ্যহীন হয়ে পড়েছে লাখো অসহায় মানুষ। দিন আনে দিন খায় মানুষগুলো কাজ না করতে পারায় অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। লকডাউনের এ দিনগুলিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিদিন এসব অনাহারী মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করছে সৃষ্টির সেবা নামের একটি সংস্থা। 

নিয়মিত হাজার মানুষকে পোলাও, ডিমের কোরমা, চিকেন ফ্রাই/ খাশির তেহারি বিতরণ করছে সংস্থাটি। এছাড়া মধ্যবিত্ত আত্মমর্যাদা সম্পন্ন প্রায় ৫০০ পরিবারকে দেয়া হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি বাজার সামগ্রী। গত লকডাউনেও টানা কয়েকমাস চলেছে এ কার্যক্রম। 

[media type="image" fid="123784" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প: দেশের বিভিন্ন দূর্যোগে, বড় বড় ইভেন্টে আয়োজন করা হয় ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প। অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা যত্নের সাথে রোগীদের সেবা দেয়। ক্যাম্প থেকেই স্বেচ্ছাসেবীরা রোগীদের পর্যাপ্ত ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করে। ক্যাম্পে হাজারো মানুষকে দেয়া হয় ফ্রি ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধ। এছাড়াও বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয়। প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমা, জেলা ইজতেমা, চরমোনাই মাহফিল, বন্যা দূর্গত এলাকা, চরাঞ্চল, ঘূর্ণিঝড় ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ কবলিত এলাকা, টেকনাফের মুহাজির ক্যাম্পসহ বিভিন্ন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।

[media type="image" fid="123785" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

মাদরাসা স্থাপন: দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল যেখানে শিক্ষার আলো এখনো পৌঁছেনি ও যেখানে দরিদ্র জনগোষ্ঠী রয়েছে। এমন জায়গা খুঁজে খুঁজে মাদরাসা স্থাপন করা হয়। ইতোমধ্যে বাগেরহাটের স্মরনখোলা এবং কুড়িগ্রামের কফিলের চরে বৃহৎ পরিসরে দু’টি মাদরাসা স্থাপন করা হয়েছে। সেখানকার দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিনামূল্যে পড়াশোনা করছে।

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের শিক্ষা ও খাদ্য সহায়তা: সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত জনগোষ্ঠী তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া সম্প্রদায়ের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে রাজধানী ঢাকার কয়েকটি পয়েন্টসহ বিভিন্ন জেলা শহরে চালু করেছে তৃতীয় লিঙ্গের মাদরাসা। যেখানে কুরআন শিক্ষা জীবনমুখী জেনারেল শিক্ষা দেয়া হয়। এছাড়া দেয়া হয়ছে খাদ্য সহায়তা ও ইফতার সামগ্রী। ঈদে দেয়া হয় ঈদ বাজার।

[media type="image" fid="123786" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

এতিমদের প্রতিপালন ও শিক্ষা ব্যবস্থা: সএই প্রজেক্টের আওতায় এখন পর্যন্ত ৬৮ জন এতিমের যাবতীয় দায়ভার গ্রহণ করেছে সৃষ্টির সেবা সংস্থা। এদের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করছে সৃষ্টির সেবা সংস্থা।

জান্নাতের খোঁজে: সংস্থার আরো একটি প্রজেক্ট জান্নাতের খোঁজে। প্রজেক্টটির কাজ রাস্তায় পড়ে থাকা অসহায়, দুস্থ, প্রতিবন্ধী মানুষের চিকিৎসা সেবা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

গৃহ ও টিউবওয়েল প্রদান: দুর্যোগ কবলিত এলাকায় এবং অন্যান্য অসহায় গৃহহীন মানুষদের আবাসস্থল বানিয়ে দেয়া হয়। স্থাপন করে দেয়া হয়েছে কয়েকশত গভীর নলকুপ।

সেবামূলক কর্মশালা: সংস্থাটির উদ্যোগে মাঝেমধ্যেই আয়োজন করা হয় সেবামূলক কর্মশালা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেবা কার্যক্রম: নিজ দেশ দেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া হয় খাদ্য, চিকিৎসা সহায়তা, ইফতার ও ঈদ সামগ্রী। ক্যাম্পে করে দেয়া হয়েছে মসজিদ, মাদরাসা।

শীতবস্ত্র বিতরণ: দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রতি বছরই তীব্র শীত দেখা দেয়। এসব জায়গায় প্রতি বছর সংস্থার পক্ষ থেকে কয়েক হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়। গতবছরও সংস্থার পক্ষ থেকে উত্তরবঙ্গ ও মুহাজির ক্যাম্প মিলিয়ে তিন হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়।

বন্যাদুর্গত এলাকায় খাদ্য সহায়তা: দেশের নিম্নাঞ্চলে প্রতি বছর বন্যায় অসহায় পরিবারগুলোকে দেয়া হয় পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা। গত বছরের বন্যায়ও সাতক্ষীরা, কুড়িগ্রাম ও ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৭০০ পরিবারকে দেয়া হয় দীর্ঘমেয়াদি খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা। এছাড়া আরো বহু সেবামূলক কাজ নিয়ে নিয়মিত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সংস্থার দায়িত্বশীল ও স্বেচ্ছাসেবীরা।

এসব কাজে সবচেয়ে বেশি কষ্ট সহ্য করছেন সংস্থার সহ সভাপতি নওমুসলিম মুহাম্মাদ রাজ। যিনি ব্রাহ্মণ পরিবার থেকে মুসলমান হয়ে নিজেকে সেবামূলক কাজে উৎসর্গ করে দিয়েছেন। 

[media type="image" fid="123788" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক আমীরুল ইসলামও নিজেকে সেবার কাজে উৎসর্গ করেছেন একেবারে সাধারণ স্বেচ্ছাসেবীর মত। সব প্রজেক্টগুলো খুব সুন্দরবাভাবে নেতৃত্ব দিয়ে সফল করেন সংস্থাটির বর্তমান সভাপতি মুহাম্মাদ ইউসুফ ফরহাদ।

উল্লেখ্য, সৃষ্টির সেবা সংস্থাটির আগের নাম হাফেজ্জী হুজুর রহ. সেবা সংস্থা। সংস্থাটির রেজিষ্ট্রেশন করতে গেলে কিছু নিয়ম জটিলতা কারণে নাম পরিবর্তন করে সৃষ্টির সেবা সংস্থা রাখা হয়।

আমারসংবাদ/এমএস/এআই