Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

অর্থনীতি ও সমাজ জীবন হোক স্বস্তিদায়ক

জানুয়ারি ২, ২০১৬, ০৮:৪৪ এএম


অর্থনীতি ও সমাজ জীবন হোক স্বস্তিদায়ক

শীতের এ দিনে আমাদের অগণিত পাঠক, লেখক, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীকে জানাই ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা। নতুন কোন কিছু আমাদের ভাবায়, স্বপ্ন দেখায়। আশায় উদ্দীপ্ত হই আমরা। গেল বছর বাংলাদেশের নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া, ক্রিকেটে অভাবনীয় সাফল্য, ওয়াশিংটনের দ্য ফরেন অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিন মনোনীত বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০০ চিন্তাবিদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৩তম অবস্থান, স্বাস্থ্যসেবা খাতে উন্নয়ন, বিদ্যুৎ খাতের অগ্রগতি, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু, আমাদের অগ্রযাত্রার ধারাকে এগিয়ে নিয়েছে।

প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো, জাতিসংঘের ৭০তম অধিবেশনে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ‘চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ’ এবং ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, যা জাতির জন্য অনেক গৌরবের। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সফল বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের দ- কার্যকরের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের দায় মোচনের কিছুটা সুযোগ হয়েছে। সে সঙ্গে এড্রিক বেকারের মতো সমাজসেবী চিকিৎসকের মৃত্যুও কাঁদিয়েছে অনেককে।

তবে ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম সামলাতেই পার হয়ে গেছে বছর, যা নিয়ে বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্টদের হতাশার অন্ত নেই। ঋণের চড়া সুদহার কিছুটা কমলেও গতি আসেনি বেসরকারি বিনিয়োগে। এদিকে ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে যেমন নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে, তেমনি বিদেশ থেকে নেয়া ঋণের অর্থ ব্যয় হয়েছে অনুমোদনহীন খাতে। একই সঙ্গে অনিয়মিত ঋণ পুনর্গঠনের অনুমোদন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি সামাল দিতে কম বেগ পেতে হয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে। বিশ্লেষকদের ধারণা, নতুন বছরে উপযুক্ত নিয়ম মেনে ঋণ বিতরণ ও আর্থিক খাতের সব অনিয়ম দূর করে সুশাসন প্রতিষ্ঠাই হবে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। শেয়ারবাজারের গতি ফেরানো এক্ষেত্রে বিবেচনায় থাকবে বলে প্রত্যাশা।

পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল আমাদের আশাবাদী করে তোলে। তবে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, অনিয়ম ও ভর্তি ক্ষেত্রে জালিয়াতির পাশাপাশি শিক্ষা খাতে নতুন করারোপ সৃষ্টি করেছিল বহুবিধ জটিলতা। এত কিছুর পরও বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে ৩৩ কোটি নতুন বই তুলে দিয়ে এ গ্লানি অনেকটাই মুছে গেছে। পক্ষান্তরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন পে-স্কেল রাষ্ট্রের সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের করেছে নতুন আশায় আশান্বিত।

এদিকে ২০১৫ সালেই প্রথমবারের মতো ৬৮ বছরের পুরনো ছিটমহল সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। সবার আশা, নতুন বছরে ঈপ্সিত উন্নয়ন ঘটবে বিদ্যুৎ খাতে। এক্ষেত্রে পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকটি আমলে নিয়ে নবায়নযোগ্য ও বিকল্প শক্তি কাজে লাগানোর যে প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে, তা আরো গতি পাবে এমনটাই সবার প্রত্যাশা। আর এটা করা গেলে উন্নয়ন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ব্যাপক ভিত্তিতে দারিদ্র্য নিরসনও সম্ভব হবে। একই সঙ্গে গ্যাস বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রকে শ্রমিকের জন্য নিরাপদ করে তোলা সম্ভব হলে নতুন বছর নিয়ে সবার যে আশাবাদ, তা বাস্তবে রূপ নেবে। নতুন বছর ২০১৬ সব মানুষের জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক; আরো গতি পাক এ দেশে চলমান উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির ধারা। অর্থনীতি ও সমাজ জীবন হোক স্বস্তিদায়ক।