Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

শক্তিধর দেশগুলোকে শক্তি প্রদর্শনে সংযত হতে হবে

জানুয়ারি ২৮, ২০১৬, ০৭:২৯ এএম


শক্তিধর দেশগুলোকে শক্তি প্রদর্শনে সংযত হতে হবে

পৃথিবী সৃষ্টির পর কোনো সময়কে যদি ‘মহাবিপর্যয়ের যুগ’ ধরা হয়, তা হচ্ছে একবিংশ শতাব্দি। একবিংশ শতাব্দির মত এ রকম সময় পৃথিবীর ইতিহাসে আর কখনো আসেনি বলে মনে করা হয়। পৃথিবীতে মানব সৃষ্টির পর জ্ঞান বিজ্ঞান উৎকর্ষ লাভ করেছে, কিন্তু এভাবে আর উৎকর্ষ লাভ করেনি। কাজেই সব কিছুর উৎকর্ষের পর তার একটি ধ্বংসের ব্যাপার আছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ হচ্ছে বৈজ্ঞানিক বিপর্যয়। এই বৈজ্ঞানিক বিপর্যয়ের একটি হুঁশিয়ারী সংকেত ইতোমধ্যেই পেয়ে গেছি।
একটি দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনে এর একটি ভয়াভহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, শক্তিশালী দেশের অন্যতম একটি দেশ চীন। চীন দিন দিন পরক্রমশালী হয়ে উঠছে। চীনকে শায়েস্তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র জল, স্থল ও আকাশ পথে সর্বশক্তি দিয়ে আক্রমণের ছক এঁকেছে। নির্দেশ পাওয়ার এক ঘন্টার মধ্যে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে চীনের ভূখন্ডে। চীনকে যত দিন পর্যন্ত পরাস্ত করা না যাবে তত দিন তা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর একমেরু বিশ্বের মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব, অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে দ্রুত শক্তিধর হয়ে ওঠা চীনকে ধুলায় মিশিয়ে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শক্তির ভারসাম্য আনতে ২০২৫ সালে এ যুদ্ধ শুরুর পরিকল্পনা করেছে।
ওই যুদ্ধে চীনের পাল্টা আক্রমণ প্রতিহত করার কৌশল নির্ধারণসহ যুদ্ধে জয়ী হতে এখন থেকে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তিরাষ্ট্রের মিত্র জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারত, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়াকে সামরিকভাবে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে ওয়াশিংটন।।‘এশিয়া প্যাসিফিক রি-ব্যালেন্স ২০২৫: সক্ষমতা, উপস্থিতি ও অংশীদারিত্ব’ নামে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কৌশল বিষয়ক একটি স্বাধীন পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এ সব তথ্য উঠে আসেছে। চীন আক্রমনে যে ছক আঁকা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ‘এয়ারসি ব্যাটল’ নামে পরিচিত এই যুদ্ধে চীনের মূল ভূখ-ে ভয়ানক বিমান ও ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালিয়ে সামারিক স্থাপনা, সম্পদ ও অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। এবং মিত্র দেশেগুলোর ঘাঁটি থেকেও একই সাথে আক্রম চালানো হবে। এরকম পরিস্থিতির যদি সৃষ্টি হয়, সে ক্ষেত্রে চীনের পদক্ষেপ কি হবে এমন প্রশ্নও কিন্তু রেয়েছে এখানে। এ ক্ষেত্রে পেন্টাগণ মনে করে, চীনের সামরিক ঘাঁটি ও শহরগুলো ধ্বংসের যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয়ার ক্ষমতা চীনের আছে। এ ছাড়া রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া থেকেও প্রতিরোধের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে পেন্টাগনের। কিন্তু এ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কি অক্ষত থাকতে পারবে? তবে এ সব ঝুঁকি সত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ছাড় দেবে না। এর অর্থ কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ? যুুক্তরাষ্ট্র যদি এরকম পরিকল্পনা করে থাকে, চীন অবশ্যই বসে থাকবে না। শুরু হয়ে যাবে বিশ্বযুদ্ধ। এ যুদ্ধে অন্যান্য দেশগুলো যার যার মিত্র দেশের পক্ষে অবস্থান নেবে। ফলে পৃথিবীর কোনো দেশই এ যুদ্ধে নিরব থেকে গা বাঁচাতে পারবে না। এ যুদ্ধে পারমাণবিক বোমাসহ যত প্রকার শক্তিশালী বোমা মওজুদ সবই ব্যবহার হবে। ফলে পৃথিবীর অবস্থা কি হবে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব নয়। এ সম্পর্কে পৃথিবীর বিখ্যাত দার্শনিক-বিজ্ঞানী আইনস্টাইন বলেছে, ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে কিনা জানি না, চতুর্থ বিশ্বযুুদ্ধ হবে লাঠি ছোটা দিয়ে। এ থেকে বোঝা যাবে পৃথিবীর বুকে কি পরিমাণ ধ্বংসযজ্ঞ হবে। অনেকে বলেছেন, এ যুদ্ধে পৃথিবীর লোক সংখ্য দাঁড়াবে মাত্র ৫০ কোটিতে। কাজেই এ সব শক্তিধর দেশগুলোকে এ ধরনের পরিকল্পনা থেকে দূরে থাকা এবং শক্তি প্রদর্শনে সংযত হওয়া প্রয়োজন।