Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪,

ব্যাংক বুথ জালিয়াতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬, ১০:৩৭ এএম


ব্যাংক বুথ জালিয়াতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

What bengal thinks today India thinks tomorrow. এমন বচনটি বোধকরি এখন আর কারো অজানা নেই। এটা নিসন্দেহে একটি গৌরবের কথা, তবে এক সময় ছিল। এখন এ নিয়ে গৌরব করার কিছু নেই। সব কিছুইতেই আমরা ইন্ডিয়ার চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছি। শুধু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেই নয়, এমন কি জাতীয় ক্ষেত্রেও। ঐ বচন এখন প্রযোজ্য এখানে, এভাবে।

What criminal thinks today Police thinks tomorrow. অপরাধীরা নতুন নতুন পদ্ধতিতে অপরাধ করে থাকে। প্রতিনিয়ত তাদের অপরাধের ‘মডাস অপারেন্ডি’ পরিবর্তন করে থাকে, যা সুস্থ চিন্তাশীল ব্যক্তিদের চিন্তারও বাইরে। সম্প্রতি পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হ্যাকারদের আক্রমনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এটিএম কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ কারণে গ্রাহককরা ভোগান্তিতে পড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকেই অলৌকিকভাবে গ্রাহকদের একাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি তখনই ধরা পড়ে, লেনদেন না করার পরও গ্রাহকদের মোবাইল ফোনে যখন লেনদেনের বার্তা আসে। এর পরই গ্রাহকরা ব্যাংগুলোর সাথে যোগযোগ শুরু করে। এ কারণে অনেক ব্যাংক বাধ্য হয়ে তাদের এটিএম সেবার আওতা সীমিত করে ফেলে। কিছুৃ কিছু ব্যাংক এটিএম সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছে। আন্ত:ব্যাংক লেনদেন নেটওয়ার্ক এখন সম্পূর্ণ বন্ধ।

হ্যাকাররা গ্রাহক সেজে বুথে গিয়ে ছোট শক্তিশালী স্কিমিং ডিভাইস রেখে আসে। এর মাধ্যমে কার্ড নম্বর, পিন এবং অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব বলে দুর্বৃত্তরা এ সব সংগ্রহ করে। এরপর তাদের নামে কার্ড তৈরি করে তা দিয়ে টাকা তুলে নেয়। এ সব অপকর্ম রোধ করতে ব্যাংকের বুথে সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। কিন্তু বুথে ঢোকার আগে সিসিটিভির ফুটেজ এড়াতে অভিনব কৌশল অবলম্বন করে। চেহারা লুকাতে মাথা নিচু করে প্রথমে বুথের ভেতরে প্রবেশ করে। এর পর মাথায় ক্যাপ পরে হ্যাকাররা।

হ্যাকাররা এরকম কৌশল অবলম্বন করে ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তুলে নিতে পারে, এ বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কখনো চিন্তা করেছেন? ভাবছিলেন, বুথে এসে যদি এরকম অপকর্ম করে, তাহলে সিসি ক্যামেরায় এটা ধরা পড়বে। কিন্তু ফুটেজে যতটুকু ধরা পড়ে তা অপরাধীকে সনাক্ত করতে যথেষ্ট নয়। ফুটেজে অস্পতার কারণে যতটুকু অনুমান করা গেছে, তাতে বলা হয়েছে যে হ্যাকাররা বিদেশী হতে পারে। এ থেকে বুঝতে হবে এ সব অপরাধীরা চিন্তার দিক থেকে কতটা অগ্রগামী। এ জন্য এ বক্তব্য এখানে প্রযোজ্য, What hacker thinks today banker thinks tomorrow’.

এরকম পদ্ধতির মাধ্যমে হ্যাকাররা বুথ থেকে অন্যের টাকা তুলে নিতে পারে, এটা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কখনো চিন্তা করেননি। বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির যুুগে কি না করা যায়। যে খানে মানুষের কিডনি পর্যন্ত চুরি হয়ে যাচ্ছে নিজের দেহ থেকে , সেখানে ব্যাংক থেকে হ্যাকিং করে টাকা চুরি, এটাকে খুব একটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার বলে মনে করা যায় না। কিন্তু নিরাপত্তার প্রশ্নে আজ আমরা সবাই আতঙ্কিত । সামাজ থেকে ছোট শিশু চুরি হয়ে যাওয়া, নারী পাচার হওয়া, জ্যান্ত মানুষ হাওয়া হয়ে যাওয়া, স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে কখন কার দেহ থেকে প্রাণটা চুরি হয়ে যায়।

যে পদ্ধতিতে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলণ করা হয় এটিএম কার্ডের মাধ্যমে, এ পদ্ধতি এখন অচল হয়ে গেছে। কোন পদ্ধতিতে এটিএম কার্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করলে হ্যাকাররা এ সব একাউন্ট আর হ্যাক করতে পারবে না, এমন বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তা ভাবনা করতে হবে। প্রয়োজনে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। একই সাথে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এটা আনন্দের কথা যে, যে সব গ্রাহকের একাউন্ট থেকে টাকা খোয়া গেছে, তাদের টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রিয় ব্যাংক।