Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

প্রত্যেক জেলায় মেডিকেল কলেজ প্রশংসনীয় উদ্যোগ

মার্চ ২২, ২০১৬, ১০:১২ এএম


প্রত্যেক জেলায় মেডিকেল কলেজ প্রশংসনীয় উদ্যোগ

গত ১৬ মার্চ বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে বাংলাদেশ চক্ষু বিজ্ঞান চিকিৎসক সমিতির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সিলেটে একটি পৃথক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং জনসংখ্যার বিবেচনায় প্রতি জেলায় একটি করে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের চিন্তাভাবনাও রয়েছে। চট্টগ্রাম এবং রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই মনে করেন রাজশাহী এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজই বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করাহ হবে। কিন্তু আমরা তা করছি না এবং করবোও না। বিশ্ববিদ্যালয় দুটি পৃথক ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান হবে। যেখানে শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর শিক্ষা লাভ করবে ও গবেষণার সুযোগ পাবে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ের নিচের শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করতে পারবে। আমরা জানি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোন প্রতিশ্রুতি দিলে তা বাস্তবায়ন করেন। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তার দৃষ্টান্ত আছে। আর তিনি দেশের অগণিত সাধারণ মানুষের চোখে প্রতি জেলায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন এঁকে দিয়েছেন তারও বাস্তাবায়ন করবেন। স্বাস্থ্যখাতে তাঁর সরকারের বিপুল অবদান আছে। তৃণমূলেও যাতে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে যায় সে চেষ্টাও অব্যহত আছে। চিকিৎসাকে তিনি ডিজিটালাইজ করেছেন। সারা দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে বিনা টাকায় চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্র খুলে দিয়েছেন। পাস করা এমবিবিএস ডাক্তারদের তিনি গ্রাম পর্যায়ে গিয়ে জনগণকে সেবা দেবার জন্য চাপ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জেলা উপজেলার হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সেবা দেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। আপনারা যারা চক্ষু চিকিৎসক, চক্ষু বিশেষজ্ঞ আছেন, বাংলাদেশ যেন সব সময় আলোকিত ভবিষ্যৎ পায় সে লক্ষ্যে কাজ করবেন। তিনি আরও বলেন, সব পর্যায়ের মানুষের কাছে উন্নত চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে তাঁর সরকার। আমরা চাই, দেশের মানুষ যেন মান সম্মত চিকিৎসা পায়, সে দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নতুন চিকিৎসক তৈরির মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতেই পৃথক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেলায় জেলায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রতিদিন জনসংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার চাহিদাও বাড়ছে। হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করলে চিকিৎসা প্রত্যাশী, রোগাক্রান্ত মানুষের ভীড় দেখলে মাথা ঘুলিয়ে যাবার উপক্রম হয়। একই সঙ্গে এ কথাও স্মরণে রাখতে হবে, প্রাইভেট চিকিৎসা এবং বেসরকারি ক্লিনিকের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয় বহুল। স্বল্প আয়ের মানুষদের এমন গলাকাটা ব্যয়বহুল চিকিৎসা অধিকাংশ সময় সাধ্যে কুলায় না। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী যদি দ্রুত তাঁর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেন, যদি জেলায় জেলায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন তাহলে জনগণের জন্য চিকিৎসা অনেকটাই সহজলভ্য হবে। বর্তমান সময় পর্যন্ত উচ্চবিত্ত ঘরের মেধাবী ছেলেমেয়েরাই চিকিৎসা বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে আসছে। গরিবের ঘর থেকে খুব সহজে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অধ্যয়ন করে চিকিৎসক হবার বিরল সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে না। অর্থেরও সংকুলান হয় না তাদের। সামর্থবানেরা সরকারি মেডিকেলে চান্স না পেলে টাকার জোরে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তি হয়ে পাস করে ডাক্তার বনে যায়। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতির ফলশ্রুতিতে যদি জেলায় জেলায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে হাতের কাছে কলেজ পেয়ে গরিবের ছেলে-মেয়েরাও স্বপ্ন দেখবে তারাও ডাক্তারি পড়বে। এর সুফল দাঁড়াবে বহুক্ষেত্রে। প্রতিটি জেলা থেকে দলে দলে অদুর ভবিষ্যতে ডাক্তার বের হয়ে আসবে। তারা তৃণমূলে পৌঁছে যাবে চিকিৎসা সেবা দিতে। ডাক্তারের অপ্রতুলতা হ্রাস পাবে, বৃদ্ধি পাবে চিকিৎসা সেবা, গড়ে উঠবে জেলায়, উপজেলায় বেশি বেশি ক্লিনিক। প্রবাদেও বলে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। সেই সুখ বাংলাদেশের মানুষ দেখবে যদি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়। এ ধরণের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হোক আমরা এটাই প্রত্যাশা করি।