Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

তনু হত্যাকাণ্ড: নিশ্চিত করতে হবে বিচার

এপ্রিল ২৩, ২০১৬, ০৬:১৬ এএম


তনু হত্যাকাণ্ড: নিশ্চিত করতে হবে বিচার

কুমিল্লা সেনানিবাসে আলোচিত ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু’র হত্যার এক মাস অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কীভাবে খুন হয়েছেন, তাইই জানা গেল না।  খুনি গ্রেফতার হওয়া তো দূরের কথা। তদন্ত কাজ শুধু একের পর এক হাতবদল হলো। পুলিশ থেকে ডিবি, ডিবি থেকে সিআইডিতে বদলি করা হল তদন্ত কাজ।  সরকারের দায়িত্ব হলো জনসাধারণের নিরাপত্তা বিধান করা। কেউ যদি খুন হন তখন খুনিকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি খুনির বিচার করাও সরকারের দায়িত্ব। সারা দেশে সচেতন মানুষ তনুর হত্যাকারীর বিচার দাবি করে আসছে। বিচার তো দূরের কথা, কবর থেকে তনুর মৃতদেহ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তও সম্পন্ন হল। কিন্তু তদন্তে কোন অগ্রগতি হয়েছে কিনা তাও কেউ জানেনা। ধারাবাহিকভাবে একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা চলছে। একেকটি নির্যাতনের ঘটনা বিভৎসতায়, বর্বরতায় আগেরটিকে ছাড়িয়ে যায়। বর্ষবরণে নারী নির্যাতনেরও এক বছর হল। চার স্তরের নিরাপত্তা, সিসি ক্যামেরা, ইন্টারনেটে অপরাধীদের ছবি- কতো কথাই শুনলাম এবং দেখলাম। কিন্তু তারপরও  সেই ঘটনার বিচার আলোর মুখ দেখেনি। এই বিচারহীনতার রেওয়াজ দুর্বৃত্তদেরকেই প্রশ্রয় দেয়। দেশের মানুষ এই বিচারহীনতার অবসান চায় ।  জনমনে আশঙ্কা জাগছে, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর ধর্ষণ ও হত্যার বিচারও একই পথে যাচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনটির নেতারা তনু হত্যার বিচার চাইলেও তা হচ্ছে না। ২৫ এপ্রিল তনু হত্যার বিচারের দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের অর্ধবেলা হরতাল ডাকা হয়েছে। উল্লেখ্য-২০ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসার নিকট থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করে তার পিতা ইয়ার হোসেন। ২১ মার্চ কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় কোন আসামির নাম উল্লেখ না করে হত্যা মামলা দায়ের করেন তার পিতা। ২১মার্চ দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তনুর মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। প্রথম ময়নাতদন্তে তনুকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি এবং মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। ২য় ময়নাতদন্তের জন্য ৩০মার্চ তনুর লাশ কবর থেকে তোলা হয়। তনুর বাবা মৃতদেহ উদ্ধারের পর জানান, তনুর মাথার পেছনে বড় আঘাত বা কাটা ছিল, নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল, পোশাক ছেড়া ছিল। যিনি দাফনের আগে গোসল করিয়েছিলেন, তিনিও একই কথা বলেন। অথচ তনুর ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে এসেছে- শরীরে বড় কোনো আঘাত নেই। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকারীদের  বিচার আজও হয়নি। তনু হত্যাকারীরাও সাগর-রুনি হত্যাকারীদের মত ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাবে কিনা-কে জানে। এইসব হত্যাকারীরা হয়তো অনেক ক্ষমতাধর বা প্রভাবশালী তাই তাদের পুলিশ-সিআইডি কেউ ধরতে পারছে না। সব কিছু নিয়ে ভেবে সরকারকে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বলতে হবে খুনি বা হত্যাকারী ধরতে সব সময় তারা পারেন না। কারন সবাই সব কাজ করতে পারেনা। ঘটনা যাই হোক, আমরা তনু হত্যার বিচার প্রত্যাশা করছি।