ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৫, ০৭:১৪ এএম
নদী মাতৃক দেশ বাংলাদেশ। এই কারণে এই দেশের যাতায়াত অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম নৌ পথ। এই পথকে নিরাপদ রাখতে হবে। তানাহলে বার বার নৌ দুর্ঘটনার স্বীকার করতে হবে।
সম্প্রতি বরগুনার তালতলী উপজেলার নলবুনিয়ার চরের কাছে দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার ডুবে গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭ যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে কোস্টগার্ড। গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পায়রা নদীর মোহনায় ট্রলারডুবির এ ঘটনাটি ঘটে। তালতলী উপেজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তলাভাঙা দরবার শরিফের মাহফিলে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রায় ২ শতাধিক যাত্রী নিয়ে রওনা হয় ট্রলারটি। বেলা ১২টার দিকে তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়ায় বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ট্রলারের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ট্রলারটি ডুবে যায়।
এতে অধিকাংশ যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছে। সাঁতরে তীরে ওঠা যাত্রী খাইরুল ইসলাম জানান, ট্রলারটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানো হয়েছে।
পায়রা নদীর মোহনায় তালতলীর নলবুলিয়া এলাকায় আসায় পরে মুসল্লিরা নড়াচড়া করতে থাকলে হঠাৎ একদিকে হেলে ট্রলারটি ডুবে যায়। উদ্ধার হওয়া অন্য এক ট্রলারযাত্রী আলীপুর বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী চান মিয়া জানান, বরগুনার বামনা উপজেলার চলাভাঙ্গা দরবার শরীফে গতকাল শুক্রবার তিন দিনব্যাপী মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। কুয়াকাটা থেকে সেই মাহফিলে যাচ্ছিলেন এ ট্রলারের যাত্রীরা।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আক্তার জানান, চলাভাঙা দরবার শরিফের মাহফিলে দেয়ার জন্য দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হয় ট্রলারটি। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে পায়রা নদীর মোহনায় নলবুনিয়ার চরের কাছে এসে ট্রলারটি ডুবে যায়।
তবে বেশিরভাগ যাত্রী সাঁতরে উঠতে পারলেও এখনও ৪-৫ জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন বলে তিনি জানান। পাথরঘাটা কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লে. রাহাত জানান, এখন পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ট্রলারটির ৫ যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া ট্রলারটি রশি দিয়ে বেঁধে তীরে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের তিনটি টিম উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও মৎস্য ব্যবসায়ী দুলাল ফরাজী জানান, অনেক যাত্রীকে তারা মাছ ধরা ট্রলার নিয়ে উদ্ধার করেছেন। নিহতদের মধ্যে দুই জন হলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটার ঝাউবনের জয়নাল আবেদীন (৬০) ও লক্ষ্মীপুরার ছয়জদ্দিন চৌকিদার (৫৫)। নিহত অপর তিন জন ও দুই নিখোঁজের পরিচয় জানা যায়নি। উল্লেখ্য, গেল বছর ৪ আগস্ট দেশের সর্বশেষ ভয়াবহ লঞ্চ ডুবিতে মোট মৃতদেহ উদ্ধার হয় ৪৮ জন। নিখোঁজ রয়ে যায় আরও ৬৮ জন।
তবে নিখোঁজ হওয়া লঞ্চটি শেষ পর্যন্ত সনাক্ত ও উদ্ধার সম্ভব হয়নি।