Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ বাস্তবায়নই মূল লক্ষ্য

জুন ৪, ২০১৬, ০৫:০৬ এএম


জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ বাস্তবায়নই মূল লক্ষ্য

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন। চলতি মাসের ২ তারিখ, বৃহস্পতিবারে উপস্থাপিত বাজেট দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট। অর্থমন্ত্রী নিজেই এটাকে উচ্চাভিলাষী বাজেট বলেছেন। তিনি মনে করেন, জনগণকে বড় সেবা দিতে হলে বড় বাজেট দিতে হবে। জনগণের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করার প্রত্যয় নিয়ে আগামী ২০২১ সালে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন নিশ্চিত করার কথা বলেন তিনি। বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশই ধরা হয়েছে এবারো।জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য মাত্রার প্রস্তাব করা হয়েছে ৭ শতাংশ। এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে বাজেট উপস্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়।

আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী অর্থ মন্ত্রীকে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করার আহবান জানান। এরপর অর্থমন্ত্রী দশম জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধীবেশনে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের সম্পূরক এবং ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন। তিনি বাজেট বক্তৃতার শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং অন্যান্য আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। প্রস্তাবিত বাজেটে অনুন্নয়ন রাজস্ব ব্যয় ১ লাখ ৮৮ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা আর উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৭ কোটি টাকা।

আওয়ামীলীগ সরকারের দুই মেয়াদে টানা ৮টি বাজেট দিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। যা দেশের ইতিহাসে রেকর্ড। বৃহস্পতিবার, ২জুন, জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের জন্য যে বাজেট উপস্থাপন করলেন অর্থমন্ত্রী তাতে তিনি প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের মাধ্যমে সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছেন। আয়ের সুষম বন্টন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের অর্থনৈতিক উত্তরণকালে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সচরাচর অসমতা পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। ক্রমবর্ধমান প্রগতিশীল করনীতির পাশাপাশি বঞ্চিত শেণীর অনুকূলে নানা ধরনের সহায়তা আয় বন্টনে ভূমিকা রয়েছে।

এ বাজেট সম্পর্কে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেন বলেছেন, এ বছর বাজেটের তাৎপর্যপূর্ণ দিক হচ্ছে- এটি শুধু এখন প্রবৃদ্ধি বা উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছে না, সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠারও কথা বলছে। এ নিয়ে বিগত বছরগুলোতে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রীর আলোচনা থাকলেও এবারই প্রথম বারের মতো বাজেটের শিরোনামে স্থান পেয়েছে।

বরাবরের মতোই বাজেট নিয়ে পক্ষেবিপক্ষে পরস্পর প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, বাজেট বাস্তবায়নই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। বাজেট সঠিক পন্থায় বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করে দেশের সার্বিক উন্নতি। সরকার কী ভাবে কোন্ কোন্ খাত থেকে রাজস্ব সংগ্রহ করবে, বছর ব্যাপী তা সংগ্রহের টার্গেট কত পরিমাণ এবং ওই রাজস্ব ব্যয়ের রূপরেখা কী-তা বাজেটে উল্লেখ থাকে। সেই মোতাবেক সরকারকে দেশের সার্বিক উন্নতি বিধানে কাজ করে যেতে হয়।

বাজেট হচ্ছে একটি সরকারের জবাবদিহিতা, প্রতিশ্রুতির দলিলও। জাতির সামনে রাষ্ট্রের আয়-ব্যয়ের হিসেব দাখিল করা হয় বাজেটের মাধ্যমে। সেখানে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় কীভাবে দেশের উন্নতি হবে। সরকারের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দুটো, প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন করা এবং বাজেটের উত্তাপে যেন বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না পায়। জিনিসপত্রের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়বেই। তার স্বাভাবিক গতিধারা থাকা চাই। তা যেন আকাশ থেকে পড়ার মতো না হয়। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা দিয়ে আর্থিক উন্নতির সূচক নির্ধারণ করতে হবে। বাজেটকে গণমুখী করা সরকারের দায়িত্ব।