Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব সতর্কতায় ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব

আগস্ট ২৪, ২০১৬, ০৫:৫৫ এএম


ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব সতর্কতায় ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব

যে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগকে প্রতিরোধ করা যায় না। কিন্তু এটাও বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যথাযথ সতর্কতার মধ্য দিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে কোনো দুর্যোগ এলে তা সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করার চেষ্টা এবং দুর্যোগপরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্টদের ভোগান্তি নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা আবশ্যক। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, গত রোববার দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যাওয়া আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে আটজন নিহত হয়েছে। ফরিদপুর সদর উপজেলায় দুই মিনিট স্থায়ী ঝড়ে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফরিদপুরের সদর উপজেলার জোবাইদা করিম জুট মিলে টর্নেডোর আঘাতে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছে। 

এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে দুই সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন।

আমরা মনে করি, যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং তারা যেন ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারে সেই উদ্যোগও গ্রহণ করতে হবে। আর ফরিদপুরের জোবাইদা করিম জুট মিলে টর্নেডোর আঘাতে যারা নিহত হয়েছেন তাদের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে এমন আশঙ্কাও করছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা। ফলে আহতদের সুকিচিৎসার ব্যাপারে যেন কোনো প্রকার ত্রুটি না থাকে তা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। যদিও জোবাইদা করিম জুট মিলের চেয়ারম্যান কারো চিকিৎসায় যাতে ত্রুটি না হয় সেজন্য সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন। এছাড়া নিহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যাপারেও আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, বর্ষাকালে বাংলাদেশে নানারকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দেয়। আর দুর্যোগকে মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মোকাবেলাও করে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্যথ এমন অভিযোগও আছে যে, বন্যাপরিস্থিতি বা ঝড়ের কবলে পড়ে থাকা বিপদগ্রস্ত মানুষ ত্রাণ বা প্রয়োজনীয় দ্রব্য সংকটে ভোগে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক বাস্তবতা বলেই আমরা মনে করি। এই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে এবারের আকস্মিক ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা যেন কোনো প্রকার দুর্ভোগের শিকার না হয় সেই দিকটি আমলে নিতে হবে।

তথ্য মতে জানা যায়, ফরিদপুর সালথা উপজেলাতেও আটঘর ও গট্টি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ে সরকারি-বেসরকারি স্কুল, দোকানসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বিদ্যালয়, ভূমি অফিস, মাদ্রাসা, মসজিদ ও দোকানসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘরহারা মানুষ খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন। এছাড়া ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের জোয়ারের মোড় এলাকায় শতাধিক গাছ ভেঙে রাস্তায় পড়ায় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।

টর্নেডো লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে লৌহজং উপজেলার গাঁওদিয়া গ্রামের শতাধিক বাড়ি ও গাঁওদিয়া বাজারের প্রায় ৫০টি দোকান। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে। আহত হয়েছে অন্তত ৪০ জন। অনেক পরিবার এখানেও খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। হঠাৎ ঝড়ে আরিচা ঘাটের বেশ কিছু ঘর, দোকান-পাট ও গাছ-পালা পড়ে গিয়েছে। এখানেও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া নওগাঁর কয়েকটি উপজেলাতেও বয়ে যাওয়া আকস্মিক ঝড়ে ২০ গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। নিহত হয়েছে দুইজন। শরীয়তপুর, টাঙ্গাইল, পাবনাতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করা ছাড়াও নানা সংকটের মধ্য দিয়ে মানবিক বিপর্যয় দেখা গেছে বলেই জানা যাচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি নিরসন হবেথ এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।