Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ঢাকায় এর গুরুত্ব অনুধাবনীয়

অক্টোবর ১৮, ২০১৬, ০৬:১৪ এএম


বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ঢাকায় এর গুরুত্ব অনুধাবনীয়

দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য দেখতে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম ঢাকায় এসেছেন গত রোববার বিকেলে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন, ওয়াশিংটন বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরে বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইয়া, ঢাকায় বিশ্বব্যংকের আবাসিক প্রতিনিধি কিমিয়াও ফানসহ সংস্থার কর্মকর্তরা। এখানে ‘বিশ্ব দারিদ্র্য বিমোচন দিবস’ পালন করবেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। ঢাকায় একটি বক্তৃতাও দেবেন তিনি। আইএমএফ এর বার্ষিক সম্মেলন শেষ করে ঢাকায় এসেছেন কিম। তিনি একজন কোরিয়ান নাগরিক। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন তখনকার বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিন।

বর্তমান বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। পদ্মা সেতুর বরাদ্দ অর্থ প্রত্যাহার করে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশ সরকারকে যথেষ্ঠ বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলেছিলো। এর পেছনে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিপক্ষ একটি গোষ্ঠির হাত ছিলো। তৎকালীন বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন বলে এমন গুজব ঢাকায় চালু হয়েছিলো।

তিক্ততার ভেতর দিয়ে অতিবাহিত হয়ে গেছে বেশ কিছু দিন। এরপর ইদানিং বিশ্বব্যাংকই তাদের প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে,বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছে। এতদিন সরকার তরফের লোকজন জোর গলায় বলে আসছিলেন বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনের কথা। এবার স্বয়ং বিশ্বব্যাংক তার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশের সাফল্য দেখতে ঢাকায় এসেছেন জন ইয়ং কিম। আমরা তাঁর আগমনকে স্বাগত জানাই। এতে আমরা গভীর আনন্দিত এ জন্য যে, বাংলাদেশের ক্রমঅগ্রগতিশীল উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের অংশীদারিত্বকে কোনোভাবে উপেক্ষা করা যায় না।

ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের যে তিক্ত সম্পর্কের সূত্রপাত হয়েছিলো, তা দূর হবে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের এই সফরের মাধ্যমে। আমরা এ ব্যাপারে আশাবাদী। উল্লেখ্য যে কেবলই মাত্র চীনের প্রেসিডেন্ট শিজিনপিং বাংলাদেশ সফর করে গেলেন। এর ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্র প্রসারিত হয়েছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের সহায়তার নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে। এর পর পরই বাংলাদেশ সফরে এসেছেন বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট। এতে নানা দিক থেকে লাভবান হবে বাংলাদেশ। দারিদ্র্যবিমোচনসহ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বর্তমানে ৩৮টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে।

এ সব প্রকল্পে এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা অর্থায়নে সম্মতি দিয়েছে সংস্থাটি। এরপরও অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে যে ধরনের ভূমিকা রাখা দরকার তা যথাযথভাবে রাখছে না বিশ্বব্যাংক। কিমের এই সফরের ফলে সেই অভাব দূর হওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ। তার ক্ষেত্রও যাচাই করবেন জন ইয়ং কিম। বাংলাদেশ একটা দিক নির্দেশনা পাবে, কী ভাবে চাহিদা মোতাবেক কর্মসূচি তেরি করবে।

বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কও গড়ে তুলতে হবে। সে সব দিকেও বাংলাদেশ একটি দিকনির্দেশনা পাবে এ সফরের ফলে। সূত্র জানাচ্ছে, হতদরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়নে এখন পর্যন্ত সরাসরি তিনটি কর্মসূচিতে অর্থায়ন করছে সংস্থাটি। এতে ২৪০ কোটি টাকা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর বাইরেও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বিদ্যুৎ খাত সহ ৩৮টি খাতে অর্থায়ন করে যাচ্ছে বিশ্বব্যাংক। সুতরাং সহজে আমরা বুঝতে পারি, আমাদের সুখ-শান্তি, অগ্রগতি, উন্নতি, সমৃদ্ধি বিশ্বব্যাংকের অর্থবরাদ্দের সঙ্গে জড়িত। তাই আমরা বর্তমান বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরকে যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।