Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

নতুন ইসির প্রথম অগ্নি পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়া আমাদের কাম্য

ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭, ০৬:০৭ এএম


নতুন ইসির প্রথম অগ্নি পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়া আমাদের কাম্য

আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি শপথ নেয়ার পর পরই ৩ মাসের মধ্যে ছোট-বড় ২৪ টি নির্বাচন পরিচালনা করবে সদ্য গঠিত কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। উপজেলা নির্বাচন ১৮ টি, সংসদ উপনির্বাচন ২ টি, পৌর নির্বাচন ৩ টি এবং কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে প্রায় পর পর। শপথ গ্রহণের মাত্র ২ দিন পরই ১৮ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটির বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিছু দিন পরই আরো ২টি আসনের উপনির্বাচন, ১৮ টি উপজেলা পরিষদসহ ২৪ টি নির্বাচন করতে হচ্ছে এই নির্বাচন কমিশনকে। আগামী ৬ মার্চ দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম ৩ উপজেলা নির্বাচন। নানা জটিলতার কারণে ২০১৪ সালে এ সব উপজেলা নির্বাচন হয় নি। দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, নালিশ-অভিযোগ নিয়েও বিএনপি নির্বাচনগুলোতে অংশ নেবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। যদিও কিছু পরস্পর বিরোধী মতামত বিএনপির মধ্যে আছে। তারা এখন দাবি করছে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার। এ ব্যাপারে তারা সরকারের কাছে সংলাপের প্রস্তাবও দেবে। গুরু দায়িত্ব স্কন্ধে তুলে নিতে হবে সিইসি কেএম নূরুল হুদাকে। বিএনপি কৌশল হিসেবে সিইসির ওপর চাপ সৃষ্টি করে রেখেছে, এই চাপ ক্রমাগত তারা বৃদ্ধি করবে। নানা অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করতেই থাকবে। এর মধ্যেই নতুন ইসিকে দলনিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করতে হবে। শপথ গ্রহণের দিন থেকেই নতুন ইসিকে অগ্নিপরীক্ষা মোকাবেলা করতে হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেছেন, আমাদের কাছে বিশেষ কোনো দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর গুরুত্ব নেই। নিরপেক্ষতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সংবিধানের ধারাকে সমুন্নত রাখবো। এর বাইরে আর কিছু নেই। রাজনৈতিক দলগুলো যেন নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহী হয়, এই কাজগুলো করবো। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো আইনি হাতিয়ার এবং এর অধীনে যে আইনগুলো হয়েছে, সেগুলো। আমার কাছ থেকে কেউ অন্যায্য সুবিধা পাবে না। আশা করি আমার কমিশনের কাছ থেকেও পাবে না। এই দৃঢ়তা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বজায় রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসিকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বিএনপির পক্ষ থেকেও সহযোগিতার আশ্বাস দিলে ভালো হতো। নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে বিএনপি-আওয়ামী লীগ দু’দলেরই ইসিকে সহযোগিতা করতে হবে। বিএনপি যদি কোমর বেঁধে নির্বাচনে নামে তাহলে কোনো দলই কারচুপি করার সুযোগ পাবে না। এটা ওপেন সিক্রেট সত্য যে, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে সেটা হবে ফাঁকা, এক তরফা নির্বাচন। তেমনি বিএনপিও আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে সেটা ফাঁকা নির্বাচনই হবে। এই বাস্তবতা অস্বীকার করা যায় না। তাই দু’দলকেই নির্বাচনে নামতে হবে, দু’দলকেই সচেতন দায়িত্ব পালন করতে হবে যাতে কোনো পক্ষই দুর্নীতি করতে না পারে। দু’দলই যদি মনে প্রাণে চায় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে তাহলে ১০০ ভাগ নিশ্চিত, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কিন্তু দু’দলই যদি কেবল নিজেদের সুবিধাটা নিশ্চিত করতে চায় তা হলে নির্বাচন প্রক্রিয়া জটিল হবে। আগের সিইসি রকীব উদ্দীন সাহেব একটা মূল্যবান কথা বলেছেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোরও সদিচ্ছা থাকতে হবে।’ সুতরাং সব রাজনৈতিক দল যদি ঘোষণা দেয় যে হারজিৎ যা হয় হোক, নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হবে। তা হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে নিশ্চিত। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো সংবিধানে বরাদ্দ সবটুকু ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করে একটা মাঠ তৈরি করা যাতে বিএনপি অভিযোগ করার সুযোগ কম পায়। ইসিকে বুঝতে হবে, শুধু সদিচ্ছাই বড় কথা নয়, বড় কথা হলো সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে প্রশাসনকে কাজে লাগানো, জনগণকেও প্রভাবিত করতে হবে। প্রস্তুত করতে হবে তৃণমূল থেকে ওপর পর্যন্ত সকল স্তরের দায়িত্বশীলকে। আমরা আশা করবো নতুন ইসি অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোক।