মার্চ ১৬, ২০১৭, ০৮:০৭ এএম
লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে বিশ্বে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে থাকে বাংলাদেশ বিমান। অভিযোগ আছে, সরকারি এ প্রতিষ্ঠান মানসম্মত সেবা কখনোই নিশ্চিত করতে পারে না। বিমান লোকসানে ডুবলেও প্রতিষ্ঠানটির কোনো কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী রহস্যজনকভাবে অল্পদিনেই অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান। বিমানে কর্মরতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ পাওয়া যায়। সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে চোরাচালানের কালিমা। দেশের ইতিহাসে বড় দুটি সোনার চালান উদ্ধার ঘটনার তদন্ত শেষে জানা গেছে, বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশেই সোনা চোরাচালান করছে সংঘবদ্ধ দেশি-বিদেশি চক্র। বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। সরকারি প্রতিষ্ঠান মাত্রই জাতীয় সম্পদ বলে বিবেচিত। প্রতিষ্ঠানের কর্মরতরা দেশবাসীকে যথাযথ সেবাদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ দায়িত্ব বাংলাদেশ বিমান পালন করছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা এ দাবি করতে পারবেন না। দুর্নীতি করে আখের গোছানোর অনেক ফাঁকফোকর থাকায় বিমানের চাকরি বরাবরই লোভনীয়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ার পর বেশ কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার পাশাপাশি ষড়যন্ত্রের অভিযোগও সামনে চলে আসে। এখন জাতীয় একটি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের চোরাচালানের মতো গর্হিত অপরাধে জড়িয়ে পড়ার খবর দেশবাসীকে উদ্বিগ্ন করবে। সোনা চোরাচালান আর দশটা অপরাধের মতো নয়। এর সঙ্গে আন্ডারওয়ার্ল্ডের বড় গডফাদাররাও জড়িত থাকে। অস্ত্র কেনাবেচার মতো কাজেও চোরাই পথে আসা সোনা ব্যবহৃত হয়। এ হিসেবে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্যও সোনা চোরাচালান বড় হুমকি হয়ে আছে। অনুমান করা যায়, চোরাই পথে আসা সোনার চালান খুব সামান্যই ধরা পড়ে। আটকে সাফল্য যদি আসেও নেপথ্যের হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। আবার বাহকদের কেউ যদি ধরাও পড়ে, জামিন পেতে অসুবিধা হয় না। একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে ধরা পড়া সোনা চোরাচালানি চক্রের বেশ কিছু সদস্য জামিনে বেরিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে। আইনজীবীরা বলছেন, এ জাতীয় মামলায় আসামিদের জামিনের ক্ষেত্রে আইনজীবীসহ সবাই আরেকটু সতর্ক থাকলেই চোরাকারবারিরা জামিনের অপব্যবহার করতে পারবে না। বাংলাদেশ বিমানের সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তির প্রশ্নটিও জড়িত এই উপলব্ধি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো দিন কী হবে না? শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বিমানকে দুর্নীতিমুক্ত করা গেলে প্রতিষ্ঠানটি লাভের মুখ দেখবে বলে অনেকেই মনে করে। এ কাজে আপস করার কোনো সুযোগ নেই।