Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষাঙ্গন চাই

রেহেনুমা সেহেলী কবির

মার্চ ১, ২০২১, ০৫:৩৫ এএম


সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষাঙ্গন চাই

শিক্ষা মানুষের উল্লেখযোগ্য পাঁচটি মৌলিক মানবাধিকার গুলোর মধ্যে অন্যতম। আন্তজার্তিক চুক্তি, সম্মেলন এবং সংবিধান অনুযায়ী সবাই শিক্ষা লাভের অধিকারী। আর শিক্ষাঙ্গন হচ্ছে শিক্ষা নামক সেই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত করার এক সর্বোৎকৃষ্ট অঙ্গন।

এই অঙ্গনেই বিকশিত হয় অনেক সুপ্ত প্রতিভা, মেধা ও মননের, গড়ে উঠে ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ও সম্ভাবনা। শিক্ষাঙ্গন কভুও কোনো পৃথক সত্ত্বা কিংবা বিচ্ছিন্ন ঘটনার তাৎপর্য বহন করে না বরং এটি আমাদের জাতীয় জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তাই শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ হতে হবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষা বান্ধব।

কিন্তু সম্প্রতি বিআরটিসি বাস পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থীর বাকবিতন্ডার জের ধরে মধ্য রাতে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মেসে এসে তাদের উপর অতর্কিত ও বর্বরোচিত হামলায় শিক্ষার্থীদের হতাহতের ঘটনা সত্যিই ন্যক্কারজনক।

এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আলটিমেটাম পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও প্রশাসন প্রদত্ত আশ্বাসের আশানুরূপ ফল না পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। 

অন্যদিকে প্রায় সমসাময়িক এরুপ আরও একটি ন্যাক্কারজনক পরিস্থিতির শিকার হয়েছে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থীরা।

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে আবাসিক হলগুলো বন্ধ থাকার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় মেস ভাড়া নিয়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সাথে ঠুনকো বিষয় নিয়ে গ্রামবাসীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ব্যাপার টি এমন ই আরেকটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। আর এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বিবৃতি অনুযায়ী বাহিরের শিক্ষার্থী বলে উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়সারাগোছের কথাবার্তা সর্বসাকুল্যে নিন্দিত।

এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণার্থে প্রশাসনিক সহযোগিতা ও তৎপরতা আবশ্যক। কেননা প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনই শিক্ষার্থীর সেকেন্ড হোম বা দ্বিতীয় নিবাস হিসেবে বিবেচ্য। আর সেই নিবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ শিক্ষাঙ্গন সংশ্লিষ্ট সকল কর্তাব্যক্তিদের নৈতিক দায়িত্ব।

অন্যথায় এভাবে সামান্য ঘটনার জেরেই ঘটতে পারে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং সৃষ্টি হতে পারে শিক্ষার অনুপযোগী ও প্রতিকূল পরিবেশ যা শিক্ষার্জনের স্বাভাবিক পরিবেশকে বিঘ্নিত করে।

তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু, সুন্দর ও শিক্ষাপোযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আগ্রাসী মনোভাবাপন্ন দলীয় রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাপুষ্ট কার্যক্রম প্রতিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গনে বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য আক্রমণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা এখন সময়ের দাবী।

অন্যথায় কোনো রুপ বিচারহীনতাই এসব দুষ্কৃতিকারীদের ইন্ধন যোগাবে এমন হীন অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে।

তাই শিক্ষাঙ্গনসমূহকে দেশ ও জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে দেশের ভাবী নাগরিকের প্রশিক্ষণক্ষেত্র রুপে নিরাপদ ও শিক্ষানুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

যেকোনো তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্রিক হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হোক।প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে নিশ্চিত হোক একটি শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষানুকূল পরিবেশ।প্রতিটি শিক্ষাঙ্গন ই হয়ে উঠুক শিক্ষার্থীর মেধা,মনন ও জ্ঞান চর্চার এক সুবিশাল ও নিরাপদ ক্ষেত্র।

লেখক: রেহেনুমা সেহেলী কবির
শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।

আমারসংবাদ/এআই